বিজ্ঞানী ও কবি ওমর খৈয়াম বড় ধরনের শুরারসিক ছিলেন। এক রাতে তিনি খুব মনোযোগ দিয়ে রুবাই লিখছিলেন। এমন সময় তার খুব তেষ্টা পেল। একজন শুরাসক্তের পিপাসা মানে... মদপানের ইচ্ছা। তবে জবরদস্ত মেধাবী এই লোকটি পণ করলেন, গোটা দুয়েক লা-জওয়াব রুবাই না লিখে তিনি মদ স্পর্শ করবেন না।
মনমতো রুবাই লেখা যখন শেষ হলো তখন রাত গভীর। ওমর হাত বাড়ালেন তার প্রিয় সিরাজির (তখনকার দিনের খুব দামি মদ) বোতলের দিকে। কিন্তু হায় হায়- বোতল তো খালি! দেরি না করে রাস্তায় নামলেন। সামনের শুরিখানায় গিয়ে হাঁক ছাড়লেন- এক বোতল সিরাজি দাও!
দোকানদার ওমর খৈয়ামকে দেখে ঘোড়ার তেজে ছুটে এসে সসম্ভ্রমে দাঁড়ালেন। আজ জানি কপালে কী আছে? স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজাম-উল-মূলকের খাস দোস্ত খৈয়াম এসে হাজির! ভয়জড়িত কণ্ঠে শুরিওয়ালা বললেন, হুজুর সিরাজি তো নেই!
: তাহলে অন্য কিছু দাও।
: হুজুরের জন্য আমার বাপ-মা কোরবান! অন্য ব্র্যান্ড নেই। আজ অনেক খদ্দের ছিল।
: আচ্ছা পুরো বোতল দরকার নেই। আমাকে এক গ্লাস দিলেও চলবে। যে কোনো পদ হোক...
: হুজুরের সামনে আমার গর্দান হাজির। কোনো মদই নেই আজ ভাণ্ডারে...
‘নেই’ ‘নেই’ শুনে বিশ্বখ্যাত অমর সৃষ্টি রুবাইয়াত-এ ওমর খৈয়ামের লেখকের চাহিদার পারদ তখন আকাশে। মদিরা তেষ্টায় কাতর কবি বললেন, সবগুলো বোতলের তলানি ঝেড়ে মিলিয়ে-ঝুলিয়ে আমাকে একটা গ্লাস বানিয়ে দাও, ভাই...কিছু একটা না হলে আজ আমার...
সুরিওয়ালা এবার কাঁপতে কাঁপতে মাটিতে পড়ে গেলেন। কান্নাজড়ানো গলায় বললেন, হুজুর সব বোতল গ্লাস ধূয়ে ফেলা হয়েছে। কী যে করি... কেন যে আমার আগে মনে হলো না যে আপনি আসতে পারেন... পানশালার মালিক পাড়লে নিজের গালে চড় মারেন- অভিব্যক্তি এমন তার।
এবার বৈজ্ঞানিক-কবি হুঁঙ্কার ছাড়লেন, আরে বুরবাক বেয়াদপের দল! ওই ধোয়া গ্লাসগুলো ধূয়ে আমাকে এক গ্লাস পানি দে...
পানশালার মালিকের চোখ কপালে!
ওদিকে ওমর খৈয়াম বলছেন, ঘাবড়াও মাৎ- নেশার দায়িত্ব আমার!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন