বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের সৃষ্টি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যেখানে বিশ্বের সব অঞ্চলের নেতারা একত্রিত হয়েছিল। হয়তো বেশিরভাগ ঐতিহাসিক জানেন না যে, সেই নেতাদের মধ্যে জেডি মাস্টার ইয়োডাও ছিলো!
সৌদি সরকার এরকমই একটি ইতিহাসের টেক্সবুক প্রত্যাহার করে নিয়েছে, যেখানে ঘটনাক্রমে একই ছবিতে বাদশা ফয়সালের সাথে স্টার ওয়ার্স চরিত্র ইয়োডা বসে আছে।
ছবিটা ব্যবহারের উদ্দেশ্য ছিল বাদশাহ ফয়সালের শাসনকে তুলে ধরা। কিন্তু যেভাবেই হোক বইয়ের সম্পাদক ছবির এমন একটা ভার্সন ব্যবহার করেছেন, যেখানে দেখা যায় জাতিসংঘ চার্টারে সাক্ষর করছেন বাদশাহ, পাশে বসে আছে স্টার ওয়ার্সের ইয়োডা।
‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখিত।’ জানিয়েছেন সৌদি শিক্ষামন্ত্রী আহমেদ আল ঈসা।
তিনি আরও বলেন, ‘পূর্বের সংস্করণ প্রত্যাহার করে নিচ্ছে এবং ইতিমধ্যে বইটির সংশোধিত সংস্করণের কাজ শুরু করেছে। এছাড়া ভুল খতিয়ে দেখতে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বাদশা ফয়সাল ও ইয়োডার ছবিটির কাজ করেছেন ২৬ বছর বয়সী শিল্পী আব্দুল্লাহ আল শেরি। আল শেরি বলেন, ‘এটা ডিজাইন আমি করেছি, কিন্তু বইয়ে এই ছবির সংযুক্তির পেছনে আমার কোনো হাত নেই।’ আল শেরি ‘শাভিশ’ ছদ্মনামে একটা প্রজেক্টে কাজ করছিলেন যেখানে আরব ইতিহাসের বিশেষ মুহূর্তগুলিতে বিভিন্ন ফিল্ম ক্যারেক্টার যুক্ত করা হয়েছে। সেই প্রজেক্টের একটি ইমেজে দেখা যায়, প্যারিসে ১৯১৯ শান্তি সম্মেলনে লরেন্স অফ এরাবিয়া এবং ইরাকের বাদশার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে স্টার ওয়ার্সের অন্যতম সুপ্রিম কমান্ডার ডার্থ ডেভার। আরেকটিতে দেখা যায়, ডার্থ ডেভার ট্রাকের পেছন থেকে ক্যাপ্টেন আমেরিকার দিকে তাকিয়ে আছে।
আল শেরি জানান, তিনি বাদশা আর ইয়োডাকে একত্রে রেখেছেন কারণ তিনি এবং ইয়োডা দুজনই বুদ্ধিমান। তাছাড়া ইয়োডার সবুজ ত্বক সৌদি পতাকার সবুজ রঙের সাথে মেলে। তাছাড়া বাদশাহ ছিলেন প্রজ্ঞাবান এবং অসামান্য বাগ্মী।
আল শেরি জানতেন না যে ছবিটা টেক্সটবুকে জায়গা পেয়েছে। আল শেরির মা একজন স্কুলশিক্ষক। তিনিই ছবিটা বইয়ে দেখে আল শেরিকে মেসেজ করেন।
বাদশার প্রতি আদৌ কোনো অশ্রদ্ধা প্রকাশে এটি করিনি আমি, নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানান আল শেরি।
[সূত্র: টেলিগ্রাফ.কো.ইউকে-তে ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ প্রকাশিত খবর]
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন