র‍্যাগিংয়ের বিকল্প হিসেবে জাবি শিক্ষার্থীরা আয়োজন করেছে 'রাখিবন্ধন উৎসব'

১৩১৫ পঠিত ... ২১:০৭, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৯

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রচলিত একটি অসুস্থ চর্চার নাম 'র‍্যাগিং'।‘র‍্যাগিং’ শব্দটি ক্যাম্পাসে আসা নতুন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সিনিয়রদের ‘পরিচয়পর্ব’ হিসেবে প্রচলিত হলেও, আদতে সিনিয়র শিক্ষার্থীরা জুনিয়রদেরকে বিভিন্নভাবে অপমান এবং হেনস্থা করে থাকেন। পুরো বিশ্বেই ক্রমাগত ‘হেজিং’ নামে পরিচিত এই ‘র‍্যাগ দেয়া’র অপসংস্কৃতি দূর করতে সচেতনতা গড়ে উঠছে। সম্প্রতি গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিংয়ের দায়ে ছয় শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই দুই শিক্ষার্থীকে ‘র‍্যাগ দেয়া’র অর্থাৎ অমানবিকভাবে অপমান ও হেনস্থা করার সেই ভিডিওটি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে র‍্যাগিং প্রসঙ্গটি আলোচনায় আসে আবারো!

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস এখনো শুরু হয়নি। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ক্লাস শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে র‌্যাগিংয়ের প্রবণতা। কিন্তু এই প্রবণতার বিপরীতে গিয়ে যুগান্তকারী উদ্যোগ নিয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৭ আবর্তনের শিক্ষার্থীরা। র‌্যাগিং নয়, রাখিবন্ধনের মাধ্যমে নবীনদের বরণ করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।

বৃহস্পতিবার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নোটিশ বোর্ডে এ সংক্রান্ত একটি ঘোষণা দেয় তারা। রাখিবন্ধনের আমেজে মুছে যাক র‌্যাগিং শীর্ষক নোটিশে বলা হয়েছে, ‘প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৮ আবর্তনের সকল শিক্ষার্থীর অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আগামী ২৪-২-২০১৯ তারিখ রবিবার ৪৭ আবর্তনের শিক্ষার্থীরা র‍্যাগিং-এর বিকল্প রাখিবন্ধন উৎসবের আয়োজন করেছেন। ৪৭ আবর্তনের শিক্ষার্থীসহ সকল আবর্তনের শিক্ষার্থীকে যথাসময়ে বিভাগে উপস্থিত হয়ে এই আনন্দঘন উৎসবকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। কেবল সাদা মনের সাহসী শিক্ষার্থীরাই এই উৎসবে আমন্ত্রিত।’

এ ধরনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৭ আবর্তনের শিক্ষার্থী ঋদ্ধ বলেন, ‘আমি প্রস্তাবটাকে স্বাগত জানিয়েছি। র‍্যাগিং বিষয়টাকে  অনেকে জাহাঙ্গীরনগরের "সংস্কৃতি" কিংবা "ঐতিহ্য" বলে আখ্যা দেয়, কিন্তু আমি মনে করি এই চর্চা কোনো সংস্কৃতি হতে পারে না। বরং একটা অসুস্থ ধারা, যেটা এক ব্যাচ থেকে আরেক ব্যাচে বয়ে চলেছে। এই অবস্থায় যেকোনো একটা ব্যাচ যদি সিদ্ধান্ত নেয় তারা বিভাগের পরবর্তী ব্যাচকে কোনো প্রকার মানসিক নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাবে না, তাহলেই একমাত্র এই নোংরামি দূর করা সম্ভব। এবং একটি উৎসবের আয়োজনই হতে পারে এই পুরো ব্যাপারটার একমাত্র বিকল্প।'

এই আয়োজনের কথা বলতে গিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথাও স্মরণ করে ঋদ্ধ বলেছেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম এসে আমি যে মানসিক চাপে পড়েছিলাম, আমি চাই না আমার কোনো জুনিয়র সেই চাপে পড়ুক। আমি চাই আমার বিভাগ হবে সবচেয়ে আনন্দ এবং বন্ধনের বিভাগ, যেখানে ভালোবাসা দিয়েই জুনিয়রদের মনে সিনিয়রদের জন্য প্রাপ্য সম্মানটুকু গড়ে উঠবে।'

১৩১৫ পঠিত ... ২১:০৭, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৯

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top