নারী আসলে কোথায় নিরাপদ?

৩৪৮১ পঠিত ... ১৭:১০, জানুয়ারি ১৩, ২০২৫

5 (6)

লেখা: দুর্বা জাহান

ডিসেম্বরের এক সকালে কাজের ব্রেকে খবর দেখছিলাম, তখন দেখলাম ৫০ জন দোষী সাব্যস্ত হয়েছে মেজ্যো রেইপ কেসে। প্রথমে পড়ে মনে হয়েছিল এইটা একটা সংঘবদ্ধ গ্রুপ, অনেকগুলো মেয়েকে ধর্ষণ করেছে মেজ্যোতে। এরপরে যা পড়লাম তা এখনও আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।

মেজ্যো বা Mazan ফ্রান্সের এক অঞ্চল। এবং এই ঘটনার মূল চরিত্র জিসেল পেলিকো। জিসেল পেলিকোর প্রাক্তন স্বামী ডমিনিক পেলিকো। কেন জিসেল পেলিকো মুখ্য? কারণ এই ভদ্রমহিলা ২০১১সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তার হাজব্যান্ড ডমিনিক তাকে ড্রাগ দিয়ে অজ্ঞান করে রেইপ করতেন, শুধু নিজে করতেন তা ভুল অন্যান্য মানুষদের বাসায় ডাকিয়ে এনে সেইম কাজ করাতেন আর সেগুলো রেকর্ড করতে।

এতটুকুই গা গুলানোর জন্য যথেষ্ট। প্রচণ্ড অসুস্থ মানসিকভাবে বিকৃত ডমিনিক যে এসব করতেন এই সম্পর্কে জিসেলের কোনো ধারণাই ছিল না। ডমিনিক কিভাবে ধরা পড়ে জানেন? একটা সুপারমার্কেটে এক মেয়ের upskirt ছবি তোলার সময়। আপস্কার্টিং হচ্ছে আপনার স্কার্টের নিচ থেকে ছবি তোলা। এই কাজটি করার সময় ডমিনিক পেলিকো এরেস্টেড হয়, এরপরে পুলিশ জাস্ট তদন্তের জন্য বাসা চেক করতে গেলে যা বের হয়ে আসে তা বিশ্বাস  করা সম্ভব নয়। বছরের পর বছর জিসেল পেলিকোকে রেইপ করার অসংখ্য ভিডিও, শুধু ডমিনিক নয় প্রায় ৭০ জনের মত ভিন্ন ভিন্ন মানুষ।

এরচেয়ে ভয়ংকর আর কিছু হতে পারে না তাই তো? জিসেলের কোন ধারণাই ছিল না তার সাথে এমন ঘটছে, কিন্তু এখানে আরেকজন ভিক্টিম হলো জিসেলের মেয়ে, অসংখ্য ছবি নিজের মেয়ের ও তুলেছে ডমিনিক।

যখন সেপ্টেম্বরে ট্রায়ালের ডাক পড়ে ৫০ জনের, জিসেল সিদ্ধান্ত নেয় সে তার এনোনিমিটি এই কেসের জন্য ধরে রাখবে না। সে চায় এই পৃথিবী জানুক যে তার সাথে কী ঘটেছে, এবং অন্যান্যরা যেন সচেতন হয় তাদের সাথে যদি এমন কিছু ঘটে থাকে।

জিসেলের বয়স ৭২ বছর, এবং এই ভদ্রমহিলা যে অসীম সাহস দেখিয়েছেন এইটা কল্পনাতীত। তার নিজের ঘর মেজ্যোতে যাকে সে বিয়ে করেছিল সে তাকে ড্রাগ দিয়ে অজ্ঞান করে অন্য মানুষকে দিয়ে রেইপ করিয়েছে বছরের পর বছর। এরপরে সে ভেঙে যায়নি, বিচারের জন্য দাঁড়িয়েছে।

এই যে NOT ALL MEN, এই কথাটা যে এত বলা হয় আপনার মাথায় একবার ঢোকার ৭০হাজার সংখ্যাটা কম নয়। এই ৭০ হাজারের প্রত্যেকের মাঝে একজন বিকৃত ডমিনিক পেলিকো লুকিয়ে আছে। এইটা কি এনাফ না?

মেজ্যো রেইপ ট্রায়াল ২০২৪ সালের অন্যতম বড় ঘটনা এবং প্রমাণ যে মেয়েরা, নারীরা নিজের ঘরেও সেইফ না। আমরা কবরেও সেইফ না। আমি ধন্যবাদ দিতে চাই সেই সকল পুরুষকে যারা আমাদের জীবনে আনসেফটি দিয়ে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন আপনারা আমাদের জীবনে না থাকলে আমরা মানুষের মর্যাদা পেতাম হয়তো এখন পাই মাংসপিণ্ডের এই বা কম কী!

 

 

 

৩৪৮১ পঠিত ... ১৭:১০, জানুয়ারি ১৩, ২০২৫

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top