রিসেট বাটন হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লিপ সার্ভিস দিয়ে দেশডাকাতি ও মানবতাবিরোধী অপরাধ না করে মুক্তিযুদ্ধের অংগীকার কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন। কট্টর ইসলামপন্হা বনাম কট্টর হিন্দুত্ববাদের কলতলার কালচারাল ওয়ার বাদ দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় সংস্কার। চিন্তার জগতে ভারত পাকিস্তানের পাতকুয়া অতিক্রম করে বৈশ্বিক সভ্যতা সরণিতে উত্তরণ। রিসেট বাটন হচ্ছে ১৯৪৭ এর পরাজিত শক্তি ও ১৯৭১ এর পরাজিত শক্তির ফাঁপা ও নির্বোধ অহংকার-বিদ্বেষ বর্জন করে পাল-সেন-সুলতানি আমলের স্বয়ংসম্পূর্ণ সম্প্রীতিময় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অনুসন্ধান। রিসেট বাটন মানে হিন্দুত্ববাদী চেতনার আওয়ামী লীগ ও ইসলামপন্হী চেতনার জামায়াতের পলিটিক্যাল ফ্রগ বিজনেস প্রত্যাখ্যান করে জনমানুষের মুক্তির আকাংক্ষাকে অনুবাদ করতে সক্ষম রাজনীতির প্রচলন।
১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা কতিপয়ের ভাগ্য বদলের হাতিয়ার হয়েছিলো। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা কতিপয়ের ভাগ্য পরিবর্তনের হাতিয়ার হয়েছে। জনমানুষের জীবনে স্বাধীনতা বিমূর্ত রয়ে গেছে। ধনী গরীবের বৈষম্যই বলে দেয় বাংলাদেশ কতিপয়তন্ত্রের ফাঁদে আটকেছিলো। ৪৭ ছিলো বৃটিশ উপনিনিবেশ মুক্তি আর ৭১ ছিলো পাকিস্তান উপনিবেশ মুক্তির দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম। ২০০৯-২৪ আওয়ামী লীগের শাসনামল ছিলো ভারতীয় উপনিবেশকাল। ফলে ৫ অগাস্ট আসতেই হতো এ জাতির জীবনে। আজ ও আগামীর নাগরিক জেন জি জীবন দিয়ে স্বাধীনতা শব্দটির অনুবাদ চেয়েছে। বাংলাদেশের জনমানুষ রাজপথে নেমে তরুণ প্রজন্মের পক্ষে যেভাবে অবস্হান নিয়েছে এরকম গণঅভ্যুথ্থান পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। ভারত-পাকিস্তান-বৃটিশ উপ উপনিবেশের বেনিফিশিয়ারি নরভোজিদের পক্ষে ৫ অগাস্টের রিসেট বাটনকে বোঝা অসম্ভব। কারণ তাদের নিজেদের বাটনগুলো ঔপনিবেশিক প্রভুদের হাতে রয়ে গেছে।
গ্রিক দার্শনিক হেরাক্লাইটাস বলেছিলেন, একই স্রোতে দুবার অবগাহন করা যায় না। ইসলামপন্হার ভীতি দিয়ে বাংলাদেশ শাসন করা যাবেনা এটা প্রমাণ হয়ে গেছে ১৯৪৭-১৯৭১ পর্যন্ত পাকিস্তানের ব্যর্থ ইসলামপন্হী শাসনে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভীতির সংগে ভারতের হিন্দুত্ববাদী চেতনা মিশিয়ে বাংলাদেশ শাসন করা যাবে না এটা প্রমাণ হয়ে গেছে ২০০৯-২৪ শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনে। এটা চিন্তার অচলায়তনে বন্দী কট্টর ইসলামপন্হী ও কট্টর আওয়ামীপন্হীরা যত দ্রুত বুঝবেন তাতেই তাদের জন্য ভালো। বহুব্যবহারে জীর্ণ কথামালার জুজু দিয়ে ভিলেজ পলিটিকসের বাতিক একবিংশের তারুণ্যের কাছে অর্থহীন। কে কত প্রগতিশীল তা আমরা ২০০৯ থেকে ২০২৪ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধ সমর্থন ও অনুতাপহীন নরভেজি কথনে দেখেছি। কে কত ইসলামশীল তা ১৯৭১ সালের মানবতা বিরোধী অপরাধ অস্বীকারে দেখেছি। দেখেছি ৫ অগাস্টের পর সাপের পাঁচ পা দেখে মাজার, মন্দির ভাংগা ও নারীর পোশাক পুলিশির বে আইনি কর্মকাণ্ডে।
কাজেই প্রতিদিন ক্ষমতা হারানোর বেদনা আর ক্ষমতা লাভের বাসনার খোয়ারি দেখার বা ফুরিয়ে যাওয়া নর্তক নর্তকীর এনটাইটেলমেন্ট বা জমিদারির আলকাপ নৃত্য দেখার আগ্রহ কারো নেই। রিসেট বাটনে চাপ দেয়ায় মুছে গেছে ঐসব অচলায়তনের যা কিছু।
নতুনের আগমনকে স্বাভাবিকভাবে নেয়াই প্রকৃতির নিয়ম। পুরোনো পাতা ঝরে গিয়ে নতুন পাতার সাজে সেজেছে বাংলাদেশ বৃক্ষ। ঝরা পাতার কান্না কেউ মনে রাখেনা। দ্যাটস লাইফ। ওল্ড অর্ডার চেন্জেথ ইয়েল্ডিং প্লেস টু নিউ।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন