স্বৈরাচারের পতন হয়েছে ১ মাসের বেশি হয়ে গেলেও মানুষের উদযাপন যেন থা্মছেই না। কেউ গণ-বিবাহ করছেন, কেউ ডাকাত ধরছেন, কেউ হানিমুনে যাচ্ছেন, কেউবা খুশিতে বিয়েও করে ফেলছেন।
তবে স্বৈরাচার পতনে এবার এক অন্যরকম উদযাপন করতে দেখা গেল মিরপুরবাসীকে। উদযাপনের অংশ হিসেবে গত ১৪ সেপ্টেম্বর মিরপুরে আয়োজন করা হয় ‘স্বৈরাচারের চল্লিশা’।
মিরপুরে যেই কয়টা স্থানে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম হয়েছে, তারমধ্যে প্রধান ছিল মিরপুর ১০। মিরপুর ১০ গোল চত্ত্বর কেন্দ্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে ওঠে। এই ১০ নাম্বারে স্বৈরাচারের চল্লিশায় খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়।
সেই ১৮ জুলাই থেকেই মিরপুর ১০ কেন্দ্রিক আন্দোলন বেশ বড়সড় ভাবে শুরু হয়। মিরপুর ১০-এর বেশ পরিচিত এক স্থান আজমল হাসপাতাল। এই হাসপাতালের সংলগ্ন গলি আন্দোলনের সময় হয়ে ওঠে এক অভেদ্য দূর্গ। স্বৈরাচারের দোসরদের হামলা, গুলিতে যখন মিরপুর ১০ রণক্ষেত্র তখন ছাত্র-জনতা আজমল হাসপাতালের গলি কেন্দ্রিক অবস্থান নেয়। সমগ্র এলাকাবাসী নেমে আসে আন্দোলনকারীদের সাহায্যে। কেউ সরাসরি আন্দোলনে অংশগ্রহণ আর কেউবা পানি, খাবার, বাসায় আশ্রয় দিয়ে সাহায্য করে। সম্পূর্ণ আন্দোলনের সময়কালে ৩ বার আজমলের গলিতে হামলাকারীরা ঢোকার চেষ্টা করেছে এবং ৩ বারই উদুম ক্যালানি খেয়ে পালিয়েছে ও আহত হয়েছে।
স্বৈরাচার পতনের ৪০ দিন উপলক্ষে মিরপুরের আন্দোলনকারীরা এই চল্লিশার আয়োজন করেছিল। শেখ হাসিনার পতন হলে আন্দোলনকারীদের মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান গরু ফালানোর ইচ্ছা পোষণ করেন তা অবশেষে ১৪ তারিখে বাস্তবায়িত হয়। আয়োজনের জন্য নিজেদের টাকা-পয়সা জোগাড় করে, বিহারী বাবুর্চিদের দিয়ে রান্না করিয়ে ৩৫০ জনের বেশি মানুষকে খাওয়ানো হয়। খাবার বিতরণ চলে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত। অনুষ্ঠানে স্থানীয়দের পাশাপাশি অভিনেত্রী বাঁধন, ভ্লগার সানি-তৌকির, এবং আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। গরুর বিরিয়ানী, আড্ডা, স্মৃতিচারণ, এবং আন্দোলনের গল্পে সবার দিনটা কেটেছে আনন্দে।
চল্লিশায় শেখ হাসিনার জন্য বিশেষ মোনাজাতও করা হয়।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন