কুয়েতে মানি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়েছিলাম: মানব পাচারে অভিযুক্ত পাপুল

১৫৯৬ পঠিত ... ২১:৪৪, জুন ২৪, ২০২০

কুয়েতে অবস্থানরত লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুলকে আমরা যখন গুগল মিট-এ ভিডিও কল দিলাম, তখন তিনি ভিডিও অফ করে অডিওতে আসলেন। এ সময় আমরা টাকা গোনার মেশিনের ফর ফর আওয়াজ পেলাম। যেন মোটা কোনো বান্ডেলের টাকা গোনা হচ্ছে।

আমরা কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই পাপুল বললেন, 'আমি একটু ল্যাবে এসেছি। থিসিসের কাজ চলছে। কদিন বাদেই সাবমিশন।' এ সময় পাশ থেকে তার স্ত্রীর কন্ঠ শুনতে পেলাম আমরা। তিনি বললেন, 'এ্যাই পাপুল! গন্ডার কোথাকার! এই বান্ডিলে নোট তো একটা কম আছে!'

পাপুল সাহেব 'এক্সকিউজ মি' বলে নোটটা খুঁজে দিয়েই যেন আবার ফিরে এলেন অডিওতে। মৃদু হেসে বললেন, 'আসলে থিসিসের কাজে মেয়েরা অনেক হিসাবী আর নিখুঁত হয়।'

আমরা আর কালক্ষেপণ না করে বললাম, 'কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে তো ভিসাবাণিজ্য ও মানব পাচারের অভিযোগ উঠেছে।'
: আপনারা এ যুগের জার্নালিস্ট হয়ে ওসব গুজবে কান দিচ্ছেন!
: কুয়েতের ব্যাংকে আপনার ১৩৮ কোটি টাকার ব্যাপারটাও কি গুজব?
: আপনারা ভুল বুঝেছেন। আমি কুয়েতে মানি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়েছিলাম। ওই ১৩৮ কোটি টাকা ছিলো আমার স্টাডি ম্যাটেরিয়াল।
: আপনার সাবজেক্টের নাম এই প্রথম শুনলাম।
: সেটা আপনাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা। আমি এবং আমার স্ত্রী এখানে প্রচন্ড অভিনিবেশ সহকারে পড়াশোনা করছি। KUET, মানে কুয়েত ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজিতে আমাদের মত ব্রাইট স্টুডেন্ট খুব কমই আছে৷ এখন আমাদের থিসিস চলছে।
: থিসিসের টপিকটা কি একটু বলবেন?
: দেখুন, আমি পুল খেলতে খুব পছন্দ করতাম। আর আমার পছন্দের টাকা ছিলো 'পাউন্ড'। সেখান থেকে আমার নাম হয় 'পাউন্ড পুল'। তার তারপর সেটা হয়ে যায় পাপুল। অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন, থিসিসের টপিকটাও টাকা রিলেটেড। অবশ্য এখন আমার প্রথম পছন্দ দিনার৷ সেই হিসেবে আমার নাম হওয়া উচিত দিপুল। হাহাহা৷
: আপনার থিসিসের অবজেক্টিভগুলা যদি একটু বলতেন তাহলে eআরকির পাঠকরাও এ ব্যাপারে পড়াশোনা করতে আগ্রহী হত।
: হ্যাঁ, এ ব্যাপারে সবারই আগ্রহী হওয়া উচিত। আমার এত টাকা যে এটাই থিসিসের মেইন প্রবলেম। টাকা খাটিয়ে তো এতদিন সবই করেছি, সাংসদ পর্যন্ত হয়েছি। তাই থিসিসের অবজেক্টিভ বলতে, আমার এই টাকাগুলা খাটিয়ে আরও কী কী করা যায় সেগুলোই স্টাডি করতেছি।

এ সময় পাপুল সাহেবের স্ত্রী আবার ডাক দিয়ে বললেন, 'এ্যাই গন্ডার! সব কাজ কি আমি একাই করব? আমি বলে তোমার এই টাকা গুনে গেলাম। অন্য কোনো মেয়ে হলে কবেই লাথি মেরে চলে যেতো।'

পাপুল সাহেব কিঞ্চিৎ লজ্জিত কন্ঠে বললেন, 'আসলে এত পড়াশোনার চাপ যে, ও মেজাজ ঠিক রাখতে পারেনা৷ তবে যাওয়ার আগে একটা কথা বলি, মানি ক্যান্ট বাই হ্যাপিনেস।'

: কিন্তু আপনি তো টাকা পিছনেই ছুটছেন..

: উহু, টাকা নয়। আমি এখন ছুটছি ডলারের পেছনে! কারণ, ডলার ক্যান বাই হ্যাপিনেস!' এটুকু বলেই হেসে উঠলেন পাপুল। তারপর পুত করে লাইনটা কেটে দিলেন৷

১৫৯৬ পঠিত ... ২১:৪৪, জুন ২৪, ২০২০

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top