মানুষের জীবনে রুম থাকে, আর সেই রুমে থাকে রুমমেট। নানা রকম রুমমেট। একেকজন একেকরকম, নানা বৈচিত্র্যে ভরপুর। সেই বিচিত্রতাই তুলে এনেছেন লিটন বিশ্বাস, আর সেটা এবার থাকছে eআরকির পাঠকদের জন্য। চলুন, দেখেই নেয়া যাক।
১। শো-অফ করা রুমমেট: এই ধরনের রুমমেট নিয়ে চলা একটু বিব্রতকর। পাবলিক প্লেসে যেখানেই দেখা হবে চিৎকার করে 'রুমমেট', 'রুমমেট' বলে ডাকা হচ্ছে এদের স্বভাব। এইভাবে ডেকে এরা সবাইকে বুঝাতে চায় আমরা রুমমেট।
২। ন্যাকা রুমমেট: এই ধরনের রুমমেটদের ন্যাকামিতে ভরপুর থাকে। কথা-বার্তা, খাওয়া-দাওয়া, পোশাক সবকিছু নিয়ে ন্যাকামি করে। এদের একটা কমন ডায়ালগ থাকে, ‘আমি তো কখনও প্রেম করবো না, এসব প্রেম যে কীভাবে করে মানুষ!’ অথচ মাস দু’য়েক পরেই এদেরকে প্রেম করতে দেখা যায়।
৩। সিঙ্গেল রুমমেট: এসব রুমমেটের তেমন কোন কাজ নাই। সারাক্ষণ 'আমি সিঙ্গেল' বলে এরা চিৎকার করতে থাকে। সব কথাতেই তারা মনে করিয়ে দেবে যে তারা সিঙ্গেল। এদের সারাদিন ফেসবুক গুতাগুতি করতে দেখা যায়। বেশিরভাগ সময়ই এরা মেয়ে পটানোতে ব্যস্ত থাকে। পটানোতে ব্যর্থ হলে প্রেমের অপকারিতা নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে বলবে ‘সিঙ্গেল লাইফ বেস্ট লাইফ।‘ তবে রাতের বেলা সিঙ্গেল হবার কষ্টে আবার আফসোস করে।
৪। মিঙ্গেল রুমমেট: এ ধরনের রুমমেটের যন্ত্রণায় অন্য রুমমেটরা বেশিরভাগ সময়ই অতিষ্ঠ থাকে। এদের নিজের বলতে কোনো সময় নেই। খাওয়া, ঘুম, টয়লেট, পড়ালেখা —সবসময় এদের কানে গোঁজা থাকে ফোন। মাঝেমাঝে এমন অবস্থা হয় যে ফোন কথা বলতে থাকা রুমমেটের প্রেমিক/প্রেমিকাকেও নিজের রুমমেট মনে হয়।
৫। চিরকুমার রুমমেট: এ জাতীয় রুমমেটরা সাধারণত বেশ চালু হয়। বেশিরভাগ সমীক্ষা থেকেই দেখা যায়, ভার্সিটিতে ভর্তির পর কারও কাছে পাত্তা না পেয়ে এরা দ্রুত চিরকুমার সংঘে নাম লিখিয়ে নেয়। সময়ের সাথে সাথে অন্যের গফ ভাগিয়ে নেওয়ার অসাধারণ ক্ষমতা অর্জন করে থাকে। তবে মজার ব্যাপার হলো, একাধিক গফ থাকার পরেও তারা স্বগর্বে নিজেদের চিরকুমার বলে দাবি করে৷
৬। পড়ুয়া রুমমেট: এরা সারাদিন মুখের সামনে বই নিয়ে বসে থাকে। এমনকি রুমে খাবার পানি না থাকলেও এরা বই ফেলে পানি আনতে যায় না। গোপন সূত্রে জানা গেছে, বারবার ওয়াশরুমে যাওয়ার ভয়ে এরা পানিও কম খায়।
৭। ঘটক রুমমেট: এদের একমাত্র কাজ হলো ঘটকালি করা। নিজের মামা, চাচা, খালু, ফুফা সবার জন্য পাত্রী দেখে দেয়া, সারাদিন মামা-চাচাদের গল্প করা এগুলা ছাড়া কোন কাজ নেই। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেও মেয়ে দেখে বেড়ায়। কেউ কেউ আবার ঘটক হয়ে নিজেই বিয়ে করে ফেলে।
৮। মুরুব্বি রুমমেট: সারাদিন জ্ঞানের কথা বলে। নানারকম উপদেশ দিয়ে থাকে। কোথায় কার সাথে ঘুরতে যাবেন এসব নিয়ে খুব আগ্রহ থাকে। কার সাথে প্রেম করছেন, সময় কাটাচ্ছেন তাদের চরিত্র বিশ্লেষণ করে সারাদিন উপদেশ দিয়ে থাকে।
৯। প্যারা নাই চিল রুমমেট: সবকিছুতেই 'প্যারা নাই চিল' মুডে থাকে এরা। হলের ডাইনিং বন্ধ, মেসে খালা নাই, খাবারের চিন্তা নাই, বাথরুমে পানি নাই, কোনকিছুতেই প্যারা নাই।
১০। হিসাবী রুমমেট: প্রতিটা জিনিস নিয়ে এরা হিসাব করে। ঘরের বাতিটা একটু রাত অব্দি জ্বললে কারেন্ট বিলের হিসাব করতে থাকে। ফ্যান বেশিক্ষণ চললে ওর রেস্ট দরকার এসব বলে ফ্যান বন্ধ করে দেয়।
১১। ধারে চলা রুমমেট: রুমমেটের শার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জি, শাড়ি, হিজাব, জামা, স্যান্ডেল, জুতা সবকিছু ধারে নিয়ে চলতে এদের বেশ ভালোই লাগে৷
১২। ট্রিট চাওয়া রুমমেট: প্রেম হলে ট্রিট, ব্রেকাপ হলে ট্রিট, পরীক্ষায় পাশ করলে ট্রিট, ফেল করলে
ট্রিট, সবকিছুতেই ট্রিট চাওয়া এদের অভ্যাস।
১৩। রাঁধুনি রুমমেট: সারাদিন নতুন নতুন রান্না করে রুমমেটদের জোর করে ধরে খাওয়ানো এদের স্বভাব। খেতে খারাপ হলেও রুমমেটদের এসব সহ্য করতে হয়।
১৪। সাহিত্যিক রুমমেট: সারাদিন রাত গল্পের বই ছাড়া কিছুই বোঝে না। কবি কবি একটা ভাব নিয়ে ঘোরে৷ খুব সাহিত্য বুঝে গেছে বলে বড়ো বড়ো লেকচার দেয়।