রিক্সাওয়ালা মামারা প্রতিদিন যে ১০ রকমের পেসেঞ্জারের সাক্ষাত পান

১৫৭০ পঠিত ... ১৫:২২, মার্চ ২৭, ২০২২

Rickshawala (1)

ঢাকাকে বলা হয় রিকশার শহর। এ শহরে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ রিকশায় চড়ে প্রতিদিন। ফলে রিকশাওয়ালা মামাদের সাথে সাক্ষাৎ হয় হরেক রকম প্যাসেঞ্জারের। eআরকির রিক্সা বিষয়ক গবেষক দল খুঁজে বের করেছে ঢাকা শহরের ১০ ধরনের প্যাসেঞ্জার। 

হুম হুম প্যাসেঞ্জার

এদের প্রিয় শব্দ হুমহুম। রিক্সাওয়ালা মামা সারা রাস্তায় দেশীয়, আন্তর্জাতিক, সামাজিক নানা সমস্যা নিয়ে বিস্তর আলোচনা, সমালোচনা করে। পক্ষান্তরে এরা কানে হেডফোন লাগিয়ে পুরো রাস্তা হুমহুম করে যায়। 

ইন্টারভ্যুয়ার প্যাসেঞ্জার 

এই ধরনের প্যাসেঞ্জার রিকশায় উঠেই রিকশাওয়ালা মামার সাথে খোশগল্পে মেতে উঠবেন। মামা কোথায় থাকে? দৈনিক আয় কত? কোথায় খায়? পরিবারের সদস্য কতজন? কত বছর ধরে রিক্সা চালায়, এমন নানা বিষয়ে তাদের বিস্তর কৌতুহল। শুনলে মনে হতে পারে, হয় উনি ভবিষ্যতে রিক্সা চালাবেন বলে মনস্থির করেছেন কিংবা রিক্সাওয়ালার মামার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্কে যেতে চান।

অদ্ভুত লাইটারহীনতায় ভোগা প্যাসেঞ্জার

এরা রিক্সায় উঠেই পকেট থেকে বিড়ি বের করে। এরপর হুট করে আবিষ্কার করে, পকেটে লাইটার নাই। এরপর রিক্সাওয়ালা মামার কাছ থেকে লাইটার নিয়ে বিড়ি ধরিয়ে আয়েশ করে বিড়ি টানেন। কেউ কেউ সিস্টেমে মামার লাইটারকে নিজের লাইটার মনে করে পকেটে ঢুকিয়ে নেন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকার রিক্সাওয়ালাদের মাসে ১টি লাইটার এই ধরণের প্যাসেঞ্জারদের পেছনে ব্যয় হয়।   

সবজান্তা প্যাসেঞ্জার

এই টাইপের প্যাসেঞ্জারের শহরের প্রতিটি অলিগলি, চিপাচুপা সব নখদর্পনে। এরা রিকশাওয়ালা মামা ভুল করে ভুল দিকে নিয়ে গেলেও ঝাড়ি মেরে সাথে সাথেই শুধরে দেবে৷ মোট কথা, এই ধরনের প্যাসেঞ্জারকে কোনোভাবেই ভুল ঠিকানায় নেওয়া যায় না৷ 

একটু চালাক প্যাসেঞ্জার

এরা শুরুতে দর কষাকষি করবে। স্বাভাবিকের তুলনায় ২০ টাকা কম বলবে। অনুমিতভাবেই রিক্সাওয়ালা মামা রাজি হবে না। এরা ‘হেঁটে যাবো’ পণ নিয়ে পায়ে হেঁটে আগাবে। সামনে গিয়ে আরেকটা রিক্সার সাথে দরদাম করবে। প্রত্যাখ্যান হয়। আবার আগাবে। এরপর কোন উপায় না পেয়ে আধা কিলোমিটার হেঁটে আগের চেয়ে ২০ টাকা বেশি দিয়ে রিক্সা নিবে। 

হিমু টাইপ প্যাসেঞ্জার 

উদাসী মনের এই ধরনের প্যাসেঞ্জারের কোনো নির্দিষ্ট গন্তব্য থাকে না। তারা মামার সাথে ঘন্টা হিসেবে চুক্তি করে, কথাবার্তার এক পর্যায়ে রিকশাওয়ালা মামাকে জানায় তাদের কাছে টাকা নেই! উল্টো মামার কাছেই খাবার আবদার করে বসে৷ আবার, কিছুদূর যাওয়ার পর প্যাসেঞ্জার ভাইটি রিকশাওয়ালা মামার হাতে হাজার টাকার নোট গুজে দিয়ে চলে যায়৷ 

লোকেশন না জানা প্যাসেঞ্জার 

এই ধরনের প্যাসেঞ্জার নিজেও জানে না তারা কোথায় যাবেন। শহরে নতুন এসেছে, রিকশাওয়ালা মামাকেই উল্টো জিজ্ঞেস করে বেসে, ‘মামা, আমার চাচাতো বোনের শ্বশুরবাড়িটা এই ব্লকের কোন রোডে বলতে পারবেন?’

গলি হারিয়ে ফেলা প্যাসেঞ্জার

এরা প্রতিদিন একই জায়গায় যাবে ও প্রতিদিনই গলি হারাবে। এ গলি ও গলি ঘুরে ফিরে রিক্সাওয়ালা মামার সাথে টাকা নিয়ে গেঞ্জাম করেই শেষ হয় এদের প্রতিদিনের রিক্সাভ্রমণ। 

গুগল ম্যাপ প্যাসেঞ্জার

এরা আস্ত একটা গুগল ম্যাপ। মামা যাওয়ার আগেই এরা মামাকে নানান ডিরেকশন দিবে। কোন রাস্তায় জ্যাম আছে, কোন রাস্তায় যাওয়া ঠিক হবে না, কোন চিপা দিয়া কীভাবে বের হওয়া যেতো। দেখলে মনে হতে পারে, এরা কয়েক বছর আগেও এই রাস্তায় রিক্সা চালাতো। 

একটু সামনে নামাইয়া দেন’ প্যাসেঞ্জার

এরা কখনোই রিক্সাওয়ালা মামাকে সঠিক লোকেশন বলবে না। এরা বলবে, নিকেতন যাবো। এরপর নিকেতন গিয়ে বলবে একটু সামনে গুলশান দুই নাম্বার নামাইয়া দেন। এরপর যথারীতি মামার সাথে ভাড়া নিয়ে ঝগড়া বাধাবে। 

১৫৭০ পঠিত ... ১৫:২২, মার্চ ২৭, ২০২২

Top