ভার্সিটিতে যে ১০টি জীবনমুখী কোর্স অবশ্যই থাকা উচিত

১২৭৭ পঠিত ... ২২:২০, মে ২০, ২০২০

ভার্সিটিতে চার বছরের গ্র্যাজুয়েশন কোর্স শেষ করতে কতরকম কোর্সই না করতে হয়। অথচ এর মধ্যে খুব কম কোর্সই বাস্তব জীবনে কাজে লাগে, এমনকি কর্মজীবনেও কাজে লাগে না বেশিরভাগই। কিন্ত জীবনে এমন অনেক কঠিন পরিস্থিতি আছে, যেসবে উতরে যাওয়ার জন্য কোর্স থাকা খুবই জরুরি। অথচ কী অদ্ভূত, পাবলিক-প্রাইভেট কোথাও নেই সেসব কোর্স। জীবনের নানান ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখীন হয়ে এসব কোর্সের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছে eআরকির 'ঠেকে শেখা' আইডিয়াবাজদের দল।

 

১# পাওনা টাকা আদায়ের কোর্স
পৃথিবীর অন্যতম কঠিন কাজ এটা। বাংলাদেশ ব্যাংক হয়তো একদিন চুরি হওয়া রিজার্ভ ফিরিয়ে আনতে পারবে, কেউ কেউ কখনোই পাওয়া টাকা আদায় করতে পারবে না। সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে যেহেতু টাকা ধার দিতেই হবে, আবার নিজের বিপদে তা উদ্ধার করার প্রয়োজনও তৈরি হবে, সেক্ষেত্রে পাওনা টাকা উদ্ধার করা নিয়ে অন্তত ১৬ ক্রেডিটের একটা কোর্স বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে থাকা উচিত।

২# ৫০০ টাকার নোট ভাংতি করার কোর্স
একটু খোঁজাখুঁজি করলে আপনি হয়তো বাঘের দুধও পেয়ে যাবেন। কিন্তু দুধের দাম দেয়ার জন্য ৫০০ টাকার নোট ভাংতি করতে পারবেন না। এমনকি এই কোর্সের ক্রেডিট ফি দিতে গিয়েও ভাংতির জন্য আটকে যাবেন। আমাদের প্রতিদিনের এমন জীবনমুখী সমস্যা সমাধানে এই কোর্স হওয়া উচিত একদম ২৪ ক্রেডিটের।

৩# পঁচা সবজি, ফল সনাক্তকরণের কোর্স
ফরমালিনমুক্ত ফল কিনে খুশি মনে বাসায় গিয়ে আবিষ্কার করলেন, ফলগুলো বেশিরভাগই পঁচা! পরেরদিন একদম জমি থেকে উঠানো বেগুন নিয়ে দেখলেন, ভেতরে গুনগুন করছে পোঁকা। সবজিওয়ালা আর ফলওয়ালার সাথে এমনই এক অদৃশ্য শত্রুতা আমাদের বেশিরভাগেরই। এই শত্রুতা থেকে না বাঁচুন, অন্তত বাসায় বকা খাওয়া থেকে বাঁচার জন্য হলেও স্কুল কলেজে এই কোর্স অবশ্যই থাকা উচিত।

৪# জিনিসপত্র দরদাম করার কোর্স
কিছু মানুষ দরদামে এতটাই কাঁচা যে ফিক্সড প্রাইজের দোকানেও তারা লস করে আসে। আর নিউমার্কেট গেলেতো দোকানদার ১০০ টাকার কচকচা নোটও দরদাম করে ২০০ টাকায় গছিয়ে দেয়। প্রতিনিয়ত আমাদের কিছুনা কিছু কিনতে হয়, করতে হয় দরদাম। সঠিকভাবে দরদাম করার জন্য একটা কোর্স থাকা বাধ্যতামূলক। এই কোর্সের অর্ডিনেটর হিসেবে মায়েদের নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।

৫# কুকুরের আক্রমণ থেকে বাঁচার কোর্স
কিছু মানুষ কুকুরকে খাওয়াইতে গেলেও কুকুর তাদের দৌঁড়াবে। কুকুর থেকে সার্ভাইব করতে একটা প্রতিরক্ষামূলক কোর্সের দরকার আছে। সেক্ষেত্রে কুকুরকে কনভিন্স করার ম্যারাথন কোর্সে না গিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার সুবিধার জন্য একটা দৌঁড়ের কোর্স শেখানো বেটার হবে।

৬# লুঙ্গি সামলানোর কোর্স
আমাদের জাতীয় পোষাক লুঙ্গি, অথচ এই দেশের বেশিরভাগ পুরুষ এই লুঙ্গিকেই সামলাতে পারে না। তাছাড়া লুঙ্গি সামলানোর সাথে ইজ্জত সামলানোটাও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয় তো বটেই, স্কুল, কলেজ, কিন্ডারগার্টেন থেকে শুরু করে একদম জাতীয়ভাবে সারাদেশের মানুষকে এই কোর্সের আওতায় নিয়ে আসা উচিত।

৭# রিক্সাওয়ালা মামাকে কনভিন্স করার কোর্স
শুধুমাত্র সঠিক সময়ে রিক্সাওয়ালা মামাকে কনভিন্স করতে না পারার ব্যর্থতায় কত প্রেম শেষ দেখে ফেলেছে, কত মানুষ চাকরি হারিয়েছে, কত মানুষ মিস করেছে ইন্টারভিউ। কী লাভ এত পড়াশোনা করে, যদি জীবনের প্রতিটি ধাপে হেরে যেতে হয় রিক্সাওয়ালা মামাদের কাছে! এই ব্যর্থতা, এই হতাশা থেকে চিরতরের মুক্তির জন্য রিক্সাওয়ালা মামাদের সাইকোলজির উপর বেজ করে একটা ১৮ ক্রেডিটের কোর্স অবশ্যই থাকা চাই।

৮# তর্কে জেতার কোর্স
তর্কে জেতার কোর্স কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেখলেই বোঝা যায়। বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েও, তর্কে জেতার স্কিল না থাকায় প্রায়ই সংবাদ সম্মেলনে নাস্তানাবুদ হন তিনি। অথচ তার ইউনিভার্সিটিতে তর্ক জেতার ১২ ক্রেডিটের একটা কোর্স থাকলে ভালোভাবেই উতরে যেতে পারতেন সংবাদ সম্মেলন। তবে আর যাই হোক, ফেসবুকের কমেন্টবক্সে তর্ক করা শেখার জন্য একটা কোচিং হইলেও দরকার...

৯# সিরিয়াস মুহূর্তে হাসি আটকে রাখার কোর্স
শাজাহান খানের কথা মনে আছে? ভদ্রলোকের একটা মুচকি হাসি পুরোদেশ অচল করে দিয়েছিলো! শাজাহান খানের মতো এতটা সিরিয়াস সময়ে হাসি না আসলেও, মোটামুটি সিরিয়াস আলোচনায় হাসি আটকে রাখতে না পারার ব্যর্থতার সাথে কমবেশি পৃথিবীর সবাই পরিচিত। এজন্য হেনস্থাও কম হতে হয় না। সিরিয়াস মুহূর্তে হাসি আটকে রাখার এই কঠিন কোর্সটি অন্তত ৩০ ক্রেডিটের হওয়া উচিত। তবে এই কোর্সের ক্লাসে বসে স্টুডেন্টরা হেসে দিলে স্যার ক্লাস থেকে বের করে দেবেন কিনা, কে জানে...

১০# বাংলাদেশ পুলিশের সাথে বাৎচিত করতে পারার কোর্স
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কমবেশি পুলিশের সাথে কথা বলতে গিয়ে মেজাজ হারানোর সাথে পরিচিত, এবং মেজাজ হারানোর দায়ে পুলিশের লাঠির বাড়ি, গালি, চড় থাপ্পড়ের সাথেও পরিচিত। পুলিশের সাথে কথা বলতে শেখানোর কোর্সের আসলে কোন দরকার নাই, কারণ পুলিশের সাথে যত ভদ্রভাবে কথা বলেন না কেন, তারা অভদ্র আচরণ করবেই। বরং পুলিশের অভদ্র আচরণের পরও কীভাবে নিজের মেজাজকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এমন একটা কোর্স থাকা উচিত।

১২৭৭ পঠিত ... ২২:২০, মে ২০, ২০২০

Top