এই যুগে হিমু ঢাকার রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করলে তার সাথে যে ১০টি ঘটনা ঘটতে পারতো

১৬৭৬ পঠিত ... ১৭:২২, নভেম্বর ১৩, ২০১৯

হিমুকে নিয়ে সব গল্প-উপন্যাসে হিমুকে যেমন দেখা যায়, তেমন দেখা যায় ঢাকাকেও! ঢাকার রাস্তায় এখান থেকে ওখানে উদ্দেশ্যহীনভাবে হাঁটাহাঁটি করে হিমু, তার হাঁটাহাঁটির সাথে আমরা তাকে যেমন দেখি, তেমনি দেখতে পাই সেই সময়ের ঢাকাকেও। হিমুর উপন্যাসে ঢাকাকে আমরা যেভাবে দেখেছি, ঢাকা তো আর তেমন নেই মোটেও! মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার... কত রকম পরিবর্তন! এখনকার ঢাকার রাস্তায় হিমু হাঁটাহাঁটি করলে তাকে কেমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হতো? দেখুন তো, নিচের ঘটনাগুলোর মতো কিছু ঘটতো কিনা। 

 

১# গুলিস্তান পুলিশ বক্সের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ধরে পাঞ্জাবির চিপায় ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে ১ লক্ষ টাকা চেয়ে বসতো। টাকা দিতে না পারলে চড় থাপ্পড়ের পাশাপাশি হিমুকে দিয়ে হালকা বডি মাসাজ করিয়ে নিতো। ক্রসফায়ারে দেয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না!

২# ঢাকার রাস্তায় যে পরিমাণ উন্মুক্ত মূত্রালয়ের ঝিরিপথ! খালি পায়ে হাঁটা হিমু নিয়মিত এইসব ঝিরিপথ পাড়িয়ে শরীরে ভয়ানক চুলকানি বাঁধিয়ে ফেলতো!

৩# ঢাকার মেট্রোরেলের ধুলাবালিতে দিনের বেলা কয়েক ঘন্টা হাটলে হিমুর হলুদ পাঞ্জাবি সাদা হয়ে যেতো। তখন আর সে হলুদ হিমু থাকতো না, সাদা সাধু হয়ে যেতো। শ্বাসকষ্টেও ভুগতো!

৪# উদ্দেশ্যহীন চলাফেরা ও অদ্ভূত রহস্যময় হাসির কারণে ঢাকার মানুষ তাকে ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে মেরে ফেলতো!

৫# ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় যেকোনো সময় অতি ব্যস্ত কোন ফুট-বাইকারের বাইকের সঙ্গে সংঘাত বাঁধিয়ে বসতো। এরপর 'এই আমি চিনোস' এর খপ্পরে পড়ে আবারো ধানমন্ডি কিংবা মোহাম্মদপুর থানার ওসির সঙ্গে বার্তালাপে বসতে হতো।

৬# হাঁটতে হাঁটতে টিএসসিতে গেলে হিমু 'টিএসসিতে আছি। আশেপাশে কেউ থাকলে চলে এসো' লিখে স্ট্যাটাস দিতো। কিন্তু হিমুর সাথে আড্ডা দেয়ার পর চা-বিড়ির বিল দেয়ার ভয়ে একজনও আসতো না। পরিচিত কেউ টিএসসিতে থাকলে সেও পালিয়ে যেতো।

৭# ভুল করে কোনো আন্দোলন-বিক্ষোভের মাঝে পড়ে গেলে হেলমেট বাহিনীর কাছ থেকে বেদম পিটুনি খেতে হতো! এখানে আর হিমুর ভুংভাং ফিলোসফি কাজ করতো না, ওগুলা সব গুজব!

৮# পহেলা বৈশাখ কিংবা পহেলা ফাল্গুনের মত উৎসবে রাস্তায় বের হয়ে হিমু শত শত হিমু-রূপা দেখে কনফিউজড হয়ে যেতো। মনে মনে ভাবতো, 'আমার সাথে তো রূপা কোনো উপন্যাসেই ঘুরতে বের হলো না, এরা তাহলে কোন রেফারেন্স ফলো করছে?'

৯# সবার ‘হিমু হতে চাই” আকাঙ্ক্ষা দেখে তাহসিনেশনের মেজাজ গরম হয়ে যেতো। হিমুর উদ্দেশ্যহীন চলাফেরার ভিডিও নিয়ে ‘এদেশের যুব সমাজ একটি লাইফলেসের মতো কেন হতে চায়’ এই মর্মে হিমুর হাঁটার ভিডিওকে নানান অ্যাঙ্গেল থেকে ক্লোজ করে দেখিয়ে একটা রোস্টিং ভিডিও বানাতো।

১০# এই সময়ের ঢাকায় আসলে হিমু বেশিক্ষণ থাকতে পারতো না। হুমায়ূন আহমেদ হিমুর কাছে যেই ঢাকার গল্প করছে সেই ঢাকা তো আর নাই। হিমুর অন্যতম বিচরণ ক্ষেত্র ঢাবি ক্যাম্পাস তো মেট্রোরেলের জন্য অচেনা হয়ে গেছেই। হিমু কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে এরপর ভুল শহরে এসেছে ভেবে আবার বইয়েই ঢুকে যেত!

১৬৭৬ পঠিত ... ১৭:২২, নভেম্বর ১৩, ২০১৯

Top