যে ৮টি সম্ভাব্য কারণে ওয়াসার এমডি ওয়াসার পানির শরবত খেলেন না

১০২২ পঠিত ... ১৯:২২, এপ্রিল ২৩, ২০১৯

ট্যাপ দিয়েই রঙ-বেরঙের পানি পাওয়ার জন্য ‘বিখ্যাত’ দক্ষিণ ঢাকার এলাকা জুরাইন। তাই ২০ এপ্রিল ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের বক্তব্য ‘ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়।’ শুনে সম্ভবত আর নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি জুরাইন নিবাসী মিজানুর রহমান। তিনি আরও কয়েকজনের সাথে মিলে জুরাইনে সরবরাহকৃত ওয়াসার পানি নিয়ে এসেছিলেন ওয়াসা ভবনে। তাদের বেশি কিছু দাবি ছিল না, এমডিকে শুধু এই ‘সুপেয়’ পানি দিয়ে তৈরি শরবত খাওয়ানোর ইচ্ছা ছিল। কিন্তু ওয়াসার এমডি এই আতিথেয়তা প্রত্যাখ্যান করেন।

অতঃপর জুরাইনবাসীর দেখার করার সুযোগ হয় ওয়াসার একজন প্রকৌশলীর সাথে। তাকেও এই ‘সুপেয়’ পানির শরবত খাওয়াতে চাইলে এই আতিথেয়তা না নিয়ে তিনি বলেন ‘আজকে শরবত খাব না, লাইন ঠিক করে শরবত খাব।’ পানির লাইনের উপরই সকল দোষ চাপিয়ে ওয়াসার শতভাগ সুপেয় পানি খাওয়ার হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করেন তিনি।

কিন্তু ওয়াসার শতভাগ সুপেয় পানি দিয়ে বানানো শরবত খেতে সমস্যাটা কোথায়? কেন খেতে চাইলেন না এমডি সাহেব এই সুপার-সুপেয় শরবত? ওয়াসার পানি একাত্তরবার ফুটিয়ে শরবত বানিয়ে খেতে খেতে তা নিয়ে ভেবেছিল eআরকির শরবত গবেষক দল!

 

১# ব্লাড সুগার

এমডি সাহেব সম্ভবত ব্লাড সুগার নিয়ে খুব চিন্তিত আছেন। কে জানে, হয়তো তার ডায়বেটিস আছে। তাই ডাক্তারের কথামত সুগার-সহ সকল মিষ্টি থেকে দূরে দূরে থাকেন। তাই একেবারে অফিসেই বিশুদ্ধতম সুপেয় পানির শরবত চলে এলেও তিনি শরবতে মুখে দেননি।

 

২# লবণ মেশানো প্র্যাংক-ভীতি

কনের বাড়িতে বরপক্ষ যাওয়ার পর তাদের শরবত দিয়ে আপ্যায়ন করার রীতি চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। তবে মিষ্টি শরবতের আশ্বাস দিয়ে লবন মেশানো হলুদ পানি খাইয়ে বরকে নাস্তানাবুদ করতে পায়তারা করে কনের ছোট ভাইবোনেরা। এমডি সাহেবের জীবনেও হয়তোবা এমনই কোন ঘটনা ঘটেছিল। ফলে তিনি লবন পানির প্র্যাংক থেকে নিরাপদ থাকতে এই শরবত খাওয়াতে অস্বীকৃতি জানান।

 

৩# মিষ্টি নামের মেয়ের সাথে কোনো ঝামেলা

সম্ভবত কৈশোরে, অর্থাৎ প্রথম জীবনে মিষ্টি নামের কোন মেয়ের প্রতি তার প্রেম ছিল। কিন্তু মিষ্টি তাকে ছ্যাকা দিয়ে চলে যায়। সেই যে মিষ্টিকে পাওয়া হলো না, তখন থেকেই তার মিষ্টির প্রতি অনীহা। ফলে মিষ্টি শরবতের কথা জেনে এড়িয়ে গেছেন সযন্তে।

 

৪# টনসিলের ব্যথা

সিজনের দোষে ঘরে ঘরে চলছে ঠান্ডা আর জ্বরের প্রকোপ। ঠান্ডা লাগার ফলে তার টনসিলে ব্যথার উপশমে নিয়মিত সেবন করছেন কুসুম গরম পানি। তার মধ্যে ওয়াসার শীতল সুপেয় পানি দিয়ে তৈরি শরবত পান করেন নি ওয়াসার এমডি।

 

৫# সামনে রোজার মাস...

আর কদিন পরই শুরু হতে যাচ্ছে মুসলমানদের পবিত্র মাস রমযান। এই গরমের দীর্ঘ দিনগুলোতে বেশ লম্বা সময় ধরেই সকল প্রকার খাদ্য ও পানীয় থেকে দূরে থেকে রোজা রাখতে হবে সবাইকে। আর তাই এই ব্যাপারটি আগে থেকে প্র্যাকটিস করতেই তিনি এখন দিনের বেলা খুব বেশি পানীয় খাচ্ছেন না। তাই একেবারে মেঘ না চাইতেই শরবত পেয়েও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন...

 

৬# তিনি অপরিচিত কারো দেয়া কিছু খান না

গণপরিবহনে আমরা প্রায়ই দেখি ‘অপরিচিত লোকের দেওয়া কিছু খাবেন না’! সম্প্রতি ফেসবুকেও কিছু ছবির মাধ্যমে ‘অজ্ঞান পার্টি’ বিষয়ক ক্যাম্পেইন খুব জনপ্রিয়ও হয়েছে। বিষয়টিকে খুব সিরিয়াসলি নিয়ে ফেলেছেন ওয়াসার এমডি। আর মিজানুর রহমান তাকে পরিচয় দিলেও তিনি তাকে চিনতে পারেননি। ফলে নিজ অফিসে বসে, নিজ প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা ‘সুপেয়’ পানি দিয়ে বানানো শরবত খাননি এই সচেতন ব্যক্তিটি।

 

৭# রুহ আফজার পাগলা সমর্থক

বাংলার ইতিহাসে সবচেয়ে বিখ্যাত শরবত হলো রুহ আফজা। হতে পারে ওয়াসার এম ডি রুহ আফজার একজন একনিষ্ঠ ভোক্তা এবং টপ ফ্যান। রুহ আফজা ছাড়া অন্য কোন শরবত খাবেন না বলে ঠিক করেছেন বলে তিনি এই শরবত খেতে চাননি তিনি।

 

৮# অন্যরকম পানীয় ভাবলেন কিনা...

ওয়াসার সুপেয় পানির ঈষৎ বাদামী রঙ দেখে এটিকে ‘অন্যরকম’ পানীয় ভেবে ভুল বুঝতে পারেন ওয়াসার এমডি। এ ধরনের পানীয় তিনি প্রকাশ্যে খেতে চান নি বলে এই শরবত থেকে দূরত্ব বজায় রাখেন।

 

আরও পড়ুন-

১০২২ পঠিত ... ১৯:২২, এপ্রিল ২৩, ২০১৯

Top