ইউটিউবার কাম আরজে কাম কন্ঠশিল্পী রাBA খাN, থুক্কু, রাবা খানের বই 'বান্ধobi' নিয়ে ফেসবুকে চলছে আলোচনা-সমালোচনার তুফান! এবারের বইমেলায় প্রকাশিত এই বইটি লেখা হয়েছে ইংরেজি এবং বাংলিশের মিশ্রণে (বাংলিশ, অর্থাৎ ইংরেজি হরফে বাংলা, জানেন নিশ্চয়ই?)। ব্যাপারটা ভালো না খারাপ, আমাদের জানা নেই। বাংলা ভাষার এতে খুব ক্ষতি হয়ে গেলো কিনা অতখানি ভাষাবিজ্ঞানও আমরা জানি না। আমরা ভাবার চেষ্টা করেছিলাম, রাবা খান যদি তার বান্ধobi বইটি বাংলিশ ভাষায় না লিখে আরও একটু এক্সপেরিমেন্টাল, মানে নোয়াখাইল্লা ভাষায় লিখতেন, তাহলে কেমন হতো? রকমারি ডটকম থেকে কয়েক পাতা ফ্রি পড়ার সুযোগে বইয়ের প্রথম তথা বাংলাদেশের প্রথম বাংলিশ ছোট গল্প 'Beli Phool' কে নোয়াখাইল্লা ভাষায় কনভার্ট করেছেন eআরকির নোয়াখাইল্লা ভাষাবিদ দলের সদস্য নাজমুল হক।
সাদা হুসসু
আঁর চাচতো বইন আঁছিয়া। হেতি আঁরতুন ১৩ বছরের বড্ডা। বড্ডা অইলে কিবো, হেতির লগে আঁর কইলজায় কইলজায় খাতিল। আন্ডা একলগে ঘুইরতাম, এমুই হেমুই যাইতাম। হেতির মার রান্দা বিরানি এমন হোয়াদ অইতো, আল্লাগো আল্লা! আবার খোলাঝাঁই হিডাও বানাইতো মেলা হোয়াদ করি। আইঁতো আছিলাম নাদান! হেতিগো বাড়িত গেলেই নাদানের মতন হমানে খাইতাম। বিরানি খাই আঁর ওজন একবার আষ্টো কেজি বারি গেছিলগোই। আঁর যে সিলিম থাকনের স্বপ্ন আছিলো, জয়া আহসানের মতো অইবার স্বপ্ন আছিলো হেই স্বপ্ন মোডে ভাঙ্গি চুরমুচুর অই যাইতো গেছিল! হেই দুক্ষের কতা অন থোন। হরের কিচ্ছা হুনেন!
আঁছিয়ার লগে থাইকতে থাইকতে আঁই মেলা বাতি অই গেছি, মানে হাকি গেছি আরি। আঁর কাছে আঁর হমাইন্না হোলা মাইয়া বেজ্ঞুনেরে লেদা চুটকিয়া মনে অইতো! আঁইত আছিলাম বাতি। হিগাল্লাই আঁছিয়া আঁরে লই হেতির হেমিকের লগে দেয়া কইরবেল্লাই যাইতো। কানে কানে এক্কান কতা হুনেন-হেতি আছিলো বেডা হাগল করইন্না। একলগে চাইর হাঁচগা বেডার হিরিত কইত্তো। বেডা জিগারে হেতি বিয়া কইরবো, হিগারে আগেই ঠিক করি রাইখছিলো। হে মিয়ার লগে দেয়া কইততো গেলে আঁরে লই যাইতো। আঁই হেমিয়ারে দুলাভাই কইতাম। হে মিয়া আঁরে কইতো “ও আঁর হরানের হালি, ও আঁর জলেখা, তুঁই বালা আছনি?” হে মিয়ার এক্কান হেরাইবেট কারও আছিলো। আন্ডা হিয়ানেত করি ঘুইরতাম। ও আন্নেগোরেতো কইতে ভুলি গেছি-আন্ডা থাকিত ঢাকা শরে! গুলশান ১ লম্বরে আর ২ লম্বরে আঁন্ডা ঘুইরতাম। হে মিয়া আঙ্গোরে মেলা কিছু খাবাইতো আর কিচ্ছা কইতো! হে মিয়ার কিচ্ছা আঁর কাছে এমন মজা লাইগদো! মাগো মা! আইঁ খালী বেটকাইতাম হেমিয়ার কিচ্ছা হুনি!
একবার কিয়া অইছে হুনেন! গুলশান ২ লম্বরে হোলা ইজ্ঞা হেমিয়ারে কইতো 'ভাইয়া, আপারে সাদা হুসসু কিনি দেন না' ভাইয়াও কিনি দিতো! আরেহ ধুর, কিয়া কইতাম যাই আংনেগোরে কিয়া কই! হোলা ইগার কতা রাখেন চাই! হোলা ইগারে আইনছি ত কিচ্ছা ইগার নাম দিবেল্লাই!
এবার আঁঙগো কিচ্ছা হুনেন! হে মিয়ার (আঁছিয়ার হেমিক) লগে আঁছিয়ার হাঙ্গা ঠিক অই গেছে! আঁইতো খুশিতে নাচা শুরু করি দিছি, নাচন থাইমছে আর চাইজেন ওমাগো মা, কোন হাঁকেদি তিনদিন চলি গেছে আঁই কইতামও হাইত্তান ন! হিয়ার হরে ঠিক কইচ্ছি আঁছিয়ার হাঙ্গার দিন হিন্দি গানের লগেও নাছুম!
কদিন হরেই আঁছিয়ার তেলাইর(হলুদ) দিন চলি আঁইছে! আঁছিয়ার তেলাইদ্দিন আন্ডা হাজনি আফার কাছে যাই হাজি আঁইছি! মাগো মা, আঁরে যে হাজনি আফা কি সুন্দর করি হাজাইছে, এক্কেরে জয়া আহসান হেল! হাজানির হরে আঁরে যদি দেইকতেন, মাগো মা কই এক্কেরে ফিট অই যাইতেন! তেলাইদ্দিন আণ্ডা কইলকাতার পানি সিং এর গানের লগে এমন নাচ দিছি! আল্লাগো আল্লা, এক্কেরে হাগলের মত নাচ! দুগার কাঁইল ভাঙ্গি গেছে নাইচতে নাইচতে!
আঁন্নেরা ত জানেন আঁই সিলিম থাইকতাম চাই। যদি মোডা হই যাই! এই ডরে আঁই আঁছিয়ার হাঙ্গার দিন কিচ্ছু খাই ন।
আরও পড়ুন-
হৈমন্তী, মহেশের মতো বাংলা সাহিত্যের ক্লাসিক ৪টি গল্প যদি রাবা খান লিখতেন