eআরকি ইলেকশন সাজেশন : নিরপেক্ষ নির্বাচনের ১০টি পদ্ধতি

১২৫৫ পঠিত ... ১৯:১১, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮

নির্বাচন অবাধ হোক, সুষ্ঠু হোক আর যেমনই হোক, নির্বাচনের পর আমরা নির্বাচন সম্পর্কে এক ধরনের রিভিউ অবশ্যই পাই, তা হলো নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়নি! সাধারনত বিরোধী দল (তা সে যে দলই হোক) নির্বাচন সম্পর্কে এ ধরণের অভিযোগ করে থাকে। কিন্তু ঠিক কী পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকবে না? eআরকি তাই ভাবতে বসেছিল নির্বাচন একেবারে শতভাগ নিরপেক্ষ করার কয়েকটি পদ্ধতি!

১# মুক্ত উদ্যানে মৌখিক ভোট
প্রাচীন গ্রিসে প্রথম গনতন্ত্র চর্চা হয়। কিন্তু আমরা তো জানিই, যেকোনো কিছু গোড়াতে সুন্দর থাকে, সময়ের সাথে সৌন্দর্য হারায়। ভোট প্রদানের ক্ষেত্রেও গোড়ার দিকে মুক্ত ময়দানে মৌখিক ভোটের সিস্টেমটা সুন্দর ছিল। এভাবে ভোট নেয়া হলে যেহেতু যা হচ্ছে সবার উপস্থিতিতেই হচ্ছে, নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠুই হওয়ার কথা। সবাই একটা মাঠে উপস্থিত হবে। নিজ নিজ দলের প্রতীক বলে জোরে জোরে চিৎকার করবে। যাদের ডাক বেশি শোনা যাবে, তারা জয়ী হিসাবে গণ্য হবেন।

 

২# কয়েন দিয়ে টস করে
ভোটকে সুষ্ঠু করার জন্য প্রত্যেক ভোটার ভোট দেবার আগে টস করে নেবেন। মুদ্রার এক পাশে নৌকা মার্কা, আরেক পাশে ধানের শীষ প্রতীক থাকবে। দৈবক্রমে যে প্রতীক উঠবে সে দলই ভোট পাবে।

 

৩# নির্বাচনম্যান
আধুনিক যুগে ভোট দিতে নির্বাচনী কেন্দ্রে কেন যেতে হবে? এত কষ্ট করার কি দরকার। নির্বাচন কমিশনই চলে আসবে ভোটারের বাসায়। আর তার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্মাণ করা হবে নির্বাচনম্যান নামের একটি রোবট! এই রোবট সবার বাসায় গিয়ে গিয়ে ভোট কালেকশন করে আসবে। আধুনিক এই রোবট সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা যায়!

 

৪# উভয় প্রার্থীর এক পোস্টার
রাস্তাঘাট, দোকানপাট, গাছপালা সর্বত্র পোষ্টারে সয়লাব। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের পোস্টারই সবসময় সংখ্যায় বেশি থাকে। সুতরাং প্রতিটি আসনে প্রধান দুই দলের দুই প্রার্থীর জন্য একটা পোস্টার করা যেতে পারে। সেই পোস্টারের দুই পাশে দুই প্রার্থীর প্রচারণা থাকবে, দুজনের জন্যই ভোট চাওয়া হবে!

 

৫# ভিনগ্রহের নির্বাচন কমিশনার
প্রতিবারই নির্বাচনের সময় বলা হয়, নির্বাচন কমিশনার পক্ষপাতী। তিনি ক্ষমতাসীন দলকে সুযোগ দিয়ে যান। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিতে হবে এই সৌরজগতের বাইরের অন্য কোনো গ্রহের বিচক্ষণ কোনো প্রাণীকে। যে এ দেশের দুই দলেরই চাহিদা পূরণ করে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারবে।

 

৬#  বিতর্ক যুদ্ধ
নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রতি আসনের প্রার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হতে পারে বিতর্ক প্রতিযোগিতা, যা সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে। বিতর্কে নিজ নিজ দলের অবস্থান তুলে ধরে ভোটে জিতলে কারা বেশি কাজ করবে, কাদের ভোট দিলে লাভ হবে, কেন তারা অন্য দলগুলোর থেকে ভালো-তা তুলে ধরবে। পুরো অনুষ্ঠান শেষে দর্শকদের ভোটে নির্বাচিত প্রার্থী সংসদ হিসেবে নির্বাচিত হবেন।

 

৭# এসএমএস ভোটিং

সকল ভোটার তাদের ভোট ফোনের এসএমএসের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের নাম্বারে প্রদান করবে। এক জন মানুষ একাধিক ভোট প্রদান করতে পারবে। কে কত বেশি ভোট দিচ্ছে এটা দিয়ে দলের প্রতি মানুষের ভালবাসা প্রকাশ পাবে, সাথে মানুষ যে নির্বাচনে টাকার প্রতি নির্লোভ সেটাও বোঝা যাবে। প্রতিটি নির্বাচনী আসনে যে যত বেশি ভোট দিবে তার জন্য থাকবে কক্সবাজারে ৩ দিন-২ রাত থাকার সুবর্ণ সুযোগ।

 

৮# ফেসবুক ভোটিং পোল
যেকোনো কিছুতে মানুষ বাস্তবে যতটা না সচেতন, ফেসবুকে তার চেয়ে দশ গুন বেশি সচেতন। ভোটাররা ভোট দিতে কেন্দ্রে আসুক আর না আসুক, ভোটটা ফেসবুকে ভোটিং পোল খুলে দিতে হলে ভোট দেবে সবাই, আবার ভোটেও স্বচ্ছতা আসবে। সেই সাথে মানুষের মনে কোনো ধোঁয়াশা থাকবে না, টাকা খেয়ে অন্য কোনো মার্কায় ভোট দিলেও সবাই জেনে যাবে।

 

৯# টেলিপ্যাথিক পদ্ধতি
নির্বাচনে ভোট কারচুপি, ব্যালট চুরি, ভয় ভীতি দেখানোর মত নানা অভিযোগ শোনা যায় ভোটদানের সময়। যদি পুরো প্রক্রিয়াটিই মনে মনে হয়, তাহলে কোনো কারচুপির অবকাশ থাকবে না। এ ক্ষেত্রে ভোটাররা মনে মনে কোন দল করেন সেটার কাউন্ট নিয়ে অটোমেটিক ভোট কাউন্ট হয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

 

১০# যাদের কম ভোটার তাদের জন্য অফার
ছোট ছোট দল নির্বাচনে যেতে চায় না, কারন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে না। নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না। যাদের ভোটার কম তাদের ভোটার বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারে নির্বাচন কমিশন। কম ভোটারওয়ালা দলকে এইসব অফার দেয়া যেতে পারে-

ক. ১০ টা ভোট আনলে একটা ফ্রি।
খ. অন্যদলের নির্বাচনী গানের সুর ও লিরিক কপি করার সুযোগ
গ. নির্বাচনে ফেসবুকের লাইক কমেন্ট কাউন্ট হবে।

১২৫৫ পঠিত ... ১৯:১১, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮

Top