ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত জনতা ব্যাংকের টিএসসি শাখায় সরকারি বৃত্তির টাকা তুলতে গেলাম।
'ম্যাম, বৃত্তির টাকা উঠাব।'
'নাম কী?'
'সঞ্জয় সরকার।'
উনি ফাইলে আমার নাম খুঁজতে লাগলেন। মনে হয় পাননি।
'জেনারেল না ট্যালেন্টপুল?'
'ট্যালেন্টপুল।'
'জেনারেল, ট্যালেন্টপুল কোনোটাতেই তোমার নাম নাই।'
'ম্যাম, একটু ভালো করে দেখেন। থাকার তো কথা।'
'তোমার কি ধারণা আমি চোখে দেখি না? ভালো করেই দেখছি। নাম নাই। হলে গিয়ে যোগাযোগ করো।'
'ম্যাম, নাম তো থাকার কথা।'
'এই ছেলে, তুমি সত্যিই বৃত্তি পাইছো তো? বৃত্তি পাইলে নাম থাকবে না কেন?'
এই কথার পর মান-ইজ্জত থাকে না! আমার পেছনে দাঁড়ানো ছেলেপেলে ইতোমধ্যে মুখ লুকিয়ে হাসছে। ভদ্রমহিলার সাথে তর্ক করতে গেলে মান-ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাবে!
ইউটার্ন মারব, এমন সময় দেখি, আরে ওই তো ফাইলে 'সঞ্জয়' লেখা দেখা যাচ্ছে! ম্যামকে বললাম।
'কোথায় তোমার নাম?'
ফাইলটা হাতে নিলাম। নাম দেখে বুঝলাম যে লোক আমার নামটা লিখেছে উনি হিন্দি সিনেমার খুব ভক্ত।
কারণ নাম লিখে রেখেছে 'সঞ্জয় দত্ত'! নামের পাশে রোল নাম্বার ঠিক আছে। অর্থাৎ সঞ্জয় ঠিক আছে, সরকার বদলে দত্ত হয়ে গেছে।
নিশ্চিত হওয়ার জন্য ভদ্রমহিলা একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট আনতে বললেন। হলে এসে নিয়ে গেলাম। আবার ঝামেলা।
'আইডি কার্ড কোথায়?'
দিলাম।
'পে-ইন-স্লিপ কোথায়?'
'আনতে বলেন নাই তো, ম্যাম।'
'তোমার একটা কমনসেন্স নাই!'
অত:পর কমনসেন্সের খোঁজে আবার হলে দৌড়।
মনে করলাম, যাক, ঝামেলা শেষ। কিন্তু না! আবার ঝামেলা।
টাকা তুলতে গিয়ে দেখি সেই ভদ্রমহিলা চেকে আমার নাম লিখেছে 'সঞ্চয় সরকার!'
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন