বহুকাল আগের কথা!
তখন তরমুজের মধ্যে কোনো বিচি ছিলো না। আম কাঁঠাল লিচু সবাই একত্রে সুখে শান্তিতে বসবাস করছিলো।
তাদের এই সুখ বেশিদিন টিকলো না, মানুষ ফল খাওয়ার সময় সব ফলকেই তরমুজের সাথে তুলনা দেয়া শুরু করলো। আম খেতে গিয়ে বললো 'কত মজা আমটা, এই আঁটিটা না থাকলে আরো কতখানি আম থাকতো! এর চেয়ে তরমুজ কত ভালো, কোনো বিচি নাই!'
কাঁঠাল খেতে গিয়েও একইভাবে বলা শুরু করলো 'তরমুজের মত বিচি ছাড়া হলে আরো শান্তি পাওয়া যেতো!' বাদ গেলো না লিচু, পেয়ারা, এমনকি বিচিওয়ালা আঙুরও।
ফলের সমাজে ক্রোধ ফেটে পড়তে শুরু করলো, কোথাকার মাটিতে জন্মানো নিচু জাত! তার সাথে তুলনা হচ্ছে ওদের? এইটা মেনে নেয়া সম্ভব না। বুদ্ধি করা হলো তরমুজকে শায়েস্তা করতে হবে! প্ল্যান করা হলো সামাজিকভাবে হেয় করা হবে ওকে প্রতি পদে পদে,তাহলে ও স্বেচ্ছায় চলে যাবে।
পরেরদিন ফল সমাজে মাইকিং করে জানানো হলো 'তরমুজের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে হয়েছে। তার কোনো বিচি নাই। সে ফল না, সবজি। তাকে যেন এখন থেকে ফলের কোনো সুবিধা দেয়া না হয়।'
তরমুজের সুখের জীবনে কালো ছায়া নেমে আসলো, ফল সমাজে যদি জায়গা না থাকে তবে কোথায় যাবে তার ইজ্জত? সে গেল আমের কাছে, গিয়ে বললো 'স্যার.. আপনি 'বিচিওয়ালা ফল কল্যাণ সমিতির' কর্ণধার, আপনাকে সবসময় মান্য করে চলি। তবুও কেন আমার সাথে এমন করলেন? আমাকে ক্ষমা করে লাইসেন্স ফেরত দেয়া যায় না?'
আম তার কালো সানগ্লাসটা নামিয়ে বললো 'Go get some balls bro.. বিচি ছাড়া আমাদের সমাজে তোমার কোনো স্থান নেই, বিচি যার জোর তার। তোমার কপাল ভালো তোমার শুধু লাইসেন্স বাতিল করেছি, নাম পালটে bichishort করে দেই নাই।' ব্যাথিত হৃদয় নিয়ে তরমুজ সে সমাজ ছেড়ে কৈলাসের পথে রওনা দিলো। গড়াতে গড়াতে বহু কষ্টে শিবের পায়ের কাছে গিয়ে বললো 'প্রভু.... '
শিব বললো 'আমি সব জানি, বুঝতে পারছি তোর মনের কষ্ট। বল কী লাগবে তোর?' তরমুজ বললো 'এত কিছু জানেন এইটা কেন বুঝেন না প্রভু, আমার বিচি লাগবে! আমাকে বিচি দেন প্রভু,আমাকে বিচি দেন।'
এর পরের ইতিহাস সবারই জানা...
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন