শ্বশুরবাড়িতে একটু বেশি সিরিয়াসলি ইয়ার্কি করে ফেললে যা হয়

১৯১৮ পঠিত ... ১০:২৩, মার্চ ২৮, ২০২০

এক গ্রামে এক জামাই ছিল। সে চুপ চাপ টাইপের লোক। আজাইরা হাসি ঠাট্টা পছন্দ করতো না। কিন্তু তার  শ্বশুর সাহেব এতে অনেক নারাজ। সব জামাই শ্বশুরবাড়িতে এসে শালা শালীদের সাথে ইয়ার্কি-ফাজলামি করে, এই বেচারা চুপ করে থাকে, কেউ ফাইজলামি করতে এলে চোখ পাকিয়ে তাকায়। কি করা, শ্বশুর সাহেব জামাইয়ের বাবার কাছে গিয়ে সব বললো। দুই বিয়াই এর মধ্যে অনেক দোস্তি ছিল। বাবা তো শুনেই ফায়ার। ছেলেকে ধরে ঝাড়ি লাগালো, 'তোর শ্বশুর সাহেব বললো, তুই নাকি ওদের বাড়িতে গিয়ে বেকুবের মত চুপ করে থাকিস? এইরকম করলে লোকে নিন্দা করে, আর যদি চুপচাপ থাকিস তাইলে তোর ঠ্যাং ভেঙ্গে দেব। এইবার থেকে ফাইজলামি ইয়ার্কি করবি।' 

জ়ামাই বেচারা চূপচাপ হলেও স্মার্ট ছেলে। সে শ্বশুরের এহেন আচরণে খুব বিরক্ত হলো। বাপকে বললো, 'ঠিক আছে, তোমারে চিন্তা করা লাগবে না। আমি কালকে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ফাইজলামি ইয়ার্কি করে আসবো।' 

পরের দিন ছেলে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে আগের বারের চেয়েও বেশি মনমরা। শ্বশুর জিগাইলো, 'কি ব্যাপার বাবা, তোমারে মনমরা লাগতেছে, সব ঠিক আছে তো?'

জামাই বলে, 'কি বলি আব্বাজান। সে বিশাল দুঃখের কথা, আমার বাবার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমরা তাকে দড়ি দিয়া বেধে রাখি। উনি মাঝে মাঝে দড়ি ছিড়ে বের হন আর একটা মোটা লাঠি নিয়া সবাইরে ধাওয়া দেন।'

দুই বিয়াইন সাহেবের অনেক দোস্তি ছিল। এই ঘটনায় উনি খুব বিচলিত হয়ে বললেন, 'ইস কি সর্বনাশা কান্ড, কালকেই আমি তোমার বাবাকে দেখতে যাব।'

জামাই বললো, 'আব্বাজান দেখতে যাবেন, কিন্তু খুব সাবধান। উনি খুব ভায়োলেন্ট কিসিমের পাগল। আপনি একটা মোটা লাঠি নিয়া যান। যদি দেখেন উনি লাঠি নিয়া আপনারে ধাওয়া দিচ্ছে আপনি লাঠি দিয়া উনার মাথায় বাড়ি দিবেন। শক্ত করে কয়েকটা বাড়ি দিলে উনার মাথা ঠান্ডা হয়ে যায়, তখন উনি পুরা স্বাভাবিক।' 

শ্বশুরকে এই সব বলে জামাই ঐদিনেই বাড়ি ফিরে আসলো। ছেলের বাপ ছেলেকে জিজ্ঞাস করলো, 'কিরে খোকা, তুই এত তাড়াতাড়ি শ্বশুরবাড়ি থেকে ফিরলি যে?'

ছেলে বলে, 'কি বলি বাবা, ঐ বাসায় কি টিকার উপায় আছে? শ্বশুর সাহেবের মাথা খারাপ হয়ে গেছে, উনি একটা মোটা বাঁশ নিয়া সবাইরে ধাওয়া দিচ্ছেন।' 

ছেলের বাবাও বন্ধু কাম বিয়ান সাহেবের দুঃসংবাদে খুব কষ্ট পেলেন, বললেন, 'হায় হায়, আমার বন্ধুর এই অবস্থা। আমি কালকেই তোর শ্বশুরকে দেখতে যাব।' ছেলে বললো, 'আব্বা যাচ্ছ যাও আটকাবো না, কিন্তু খুব সাবধান। সাথে একটা মোটা দেখে ডান্ডা নিয়া যাও। যদি দেখো শ্বশুর সাহেব তোমারে ধাওয়া দিচ্ছেন তুমি লাঠি দিয়া উনার মাথায় কয়েকটা বাড়ি মারবা। গোটা কয়েক ডান্ডা পড়লেই উনার মাথা ঠান্ডা হয়ে যায়।'

পরের দিন সকালে দুই গ্রাম থেকে দুই বিয়াইন দুইটা মোটা লাঠি নিয়া রওনা হলেন। মাঝ পথে দুজন দূর থেকে দুজনকে দেখলেন, হাতের লাঠিও পরিস্কার দেখলেন। সাথে সাথে উনারা বুঝে গেলেন, বিয়াইন সাহেবের মাথা গরম। দুইজনেই ডান্ডা নিয়া একে অপরকে ধাওয়া। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুইজনের মধ্যে দমাদম লাঠা লাঠি শুরু হয়ে যায়। 

গ্রামবাসীরা এই ঘটনা দেখে অবাক। তারা কোন রকমে দুই জনকে আলাদা করে বলে, তোমাদের দুই বিয়াইনের মধ্যে এত দোস্তি ছিল আগে, হঠাৎ কী হইলো যে তোমরা মারামারি করতেছো? দুই জনেই মাথা খারাপের কথা এবং রেফারেন্স হিসাবে জামাইয়ের কথা বললো। 

পাড়ার মুরুব্বীরা জামাইয়ের কানে ধরে নিয়া আসলো। জামাই রণক্ষেত্রে এসে হাত জোড় করে বলে, 'মুরুব্বীরা, আপনেরা বলেন আমার কী দোষ! আমার আব্বা আর শ্বশুর আব্বা দুজনেই আমার ফাইজলামী না করায় ভীষণ নিরাশ, তাদের কথা মতই এইবার আমি শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে একটা মাত্র ফাইজলামী করছি, তাতেই এত রক্তারক্তি। বেশি করলে না জানি কি হত।'

১৯১৮ পঠিত ... ১০:২৩, মার্চ ২৮, ২০২০

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top