অনুস্বার বিসর্গ

১২০৮ পঠিত ... ২১:০৮, জানুয়ারি ০১, ২০১৯

জসীমউদদীন একজন প্রখ্যাত বাঙালী কবি। যিনি পল্লীকবি নামেও পরিচিত। ১৯৩৩ সালে প্রবাদ প্রতিম পুরুষ এবং ময়মনসিংহ গীতিকার সম্পাদক ড. দীনেশ চন্দ্র সেনের অধীনে, তিনি, রামতনু লাহিড়ী রিসার্চ এ্যাসিস্ট্যান্ট পদে যোগ দেন। এ সময়ে তাকে গবেষণার জন্যে বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলে প্রচলিত গল্প সংগ্রাহকের কাজ করতে হয়। পল্লী অঞ্চলে প্রচলিত রম্যগল্পের সেই দুই খন্ডের সংকলন 'বাঙালির হাসির গল্প' থেকে একটি রম্যগল্প দেয়া হলো eআরকির পাঠকদের জন্য। 

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

একজনের দুই জামাই। বড় জামাই সংস্কৃত পড়িয়া মস্তবড় পন্ডিত! ছোট জামাই মোটেই লেখাপড়া জানে না। তাই বড় জামাই যখন শ্বশুর বাড়ি আসে, সে তখন আসে না।
সেবার পূজার সময় শ্বশুর ভাবিলেন, দুই জামাইকে একত্র করিয়া ভালোমতো খাওয়াই। তাছাড়া তাঁদের দুইজনের সঙ্গে তো আলাপ পরিচয় থাকা উচিত। কিন্ত বড় জামাইর কথা শুনিলে ছোট জামাই আসিবে না। তাই বড় জামাইর আসার কথা গোপন করিয়া সে ছোট জামাইকে নিমন্ত্রণ দিল।

ছোট জামাই শ্বশুর বাড়ি আসিয়া শুনিলো বড় জামাইও আসিতেছে। হায়! হায়! কী করিয়া সে বড় জামাইর সঙ্গে কতাবার্তা বলিবে! সে শুনিয়াছে বড় জামাই নাকি সংস্কৃত ছাড়া কথাই বলে না। বড় জামাই তখন বাড়ির সামনে আসিয়া পড়িয়াছে; শালা-শালীদের মুখে এই খবর শুনিয়া ছোট জামাই ভয়ে খাটের তলায় যাইয়া লুকাইয়া রহিল।

বড় জামাই আসিয়া শালা-শালীদের সঙ্গে সংস্কৃত ভাষায় কথা বলিতে লাগিল। শালা-শালীরাও দুই-এক কথায় সংস্কৃতেই তাহার উত্তর দিতেছিল। সংস্কৃত ভাষায় প্রায় প্রতি শোব্দেই একটা অনুস্বার (ং) বা বিসর্গ (ঃ) থাকে। বড় জামাইর মুখে সংস্কৃত শুনিয়া সে ভাবিল, অনুস্বার-বিসর্গ দিলেই যদি সংস্কৃত হয় তবে সে খাটের নিচে বসিয়া আছে কেন?

সে খাটের তলা হইতে বলিয়া উঠিল-
"অনুস্বারং দিলেং যদিং সংস্কৃতং হং,
তবেং কেনং ছোটং জামাইয়ং খাটেরং তলেং রং?"

শুনিয়া শালা-শালীরা হাসিতে হাসিতে তাহাকে খাটের তলা হইতে উঠাইয়া আনিল। ছোট জামাইর সংস্কৃত শুনিয়া বড় জামাই মৃদু হাসিল।

১২০৮ পঠিত ... ২১:০৮, জানুয়ারি ০১, ২০১৯

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top