[হুমায়ূন আহমেদের 'এলেবেলে' বাংলা রম্য সাহিত্যে এক অনন্য সংযোজন। এর শিরোনামের রচনাগুলো তিনি তার ছোট ভাই আহসান হাবীবের সম্পাদনায় প্রকাশিত মাসিক উন্মাদের জন্য লিখা শুরু করলেও পরে খবরের কাগজ, কিছুমিছু, বিচিত্রার মতো বিভিন্ন সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরপর 'এলেবেলে' নামে দুই খন্ডে মলাটবদ্ধ করেন। এলেবেলে নামে এই রচনাগুলো লেখা প্রসঙ্গে লেখক শুরুতে বলেছিলেন, 'আমার সমস্ত লেখাই এলেবেলে। আমি আবার আলাদা করে এলেবেলে কেন লিখব?' তবুও তিনি লিখেছেন এবং বাংলা রম্য সাহিত্যেকে সমৃদ্ধ করেছেন। লেখকের এই লেখাটি নেওয়া হয়েছে দিনরাত্রি প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত 'এলেবেলে দ্বিতীয় পর্ব' থেকে। মূল লেখায় কোনো শিরোনাম না থাকলেও পাঠকের সুবিধার জন্য শিরোনাম দিয়ে প্রকাশিত হলো।]
সিদ্দিকুর রহমান খন্দকার বিরস মুখে বসে আছেন।
মন খারাপ হলেই তাঁর টক ঢেকুর ওঠে। সন্ধ্যা থেকে তাই উঠছে। এক ঘণ্টার মধ্যে কুড়িটা ঢেকুর ওঠে গেছে। ঘণ্টায় কুড়িটা হিসেবে ঢেঁকুর ওঠার মত কারণ ঘটেছে। ইলেকশনে তাঁর মার্কা পড়েছে কুমীর। এত কিছু থাকতে তাঁর ভাগ্যে পড়ল কুমীর? এই কুৎসিত প্রাণী মানুষের কোন উপকারে আসে বলে তো তিনি জানেন না। ভোটাররা কুমীরের নাম শুনলেই পিছিয়ে যাবে। তিনি কল্পনায় পরিষ্কার দেখছেন, লোকে বলাবলি করছে খাল কেটে কুমীর আনবেন না। সিদ্দিককে ভোট দেবেন না।
এতদূর এসে পিছিয়ে পড়াটা ঠিক হবে কি-না তাও বুঝতে পারছেন না। টাকা খরচ হচ্ছে জলের মত। সব সংগঠনকে টাকা দিতে হচ্ছে। কেউ যেন বেজার না হয়। টাকা দিতে হচ্ছে হাসিমুখে গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে। টাকাও যে আদর করে দিতে হয় আগে জানতেন না। কত অদ্ভুত সংগঠন যে বের হচ্ছে। আজ সকালে চাঁদা চাইতে একদল আসল। তিনি হাসিমুখে বললেন,
‘বাবারা, তোমাদের সমিতির নাম কি?’
‘বিবিসি শ্রবণ সমিতি।’
‘সেটা আবার কি?’
‘আমরা দল বেঁধে বিবিসি’র খবর শুনি। তারপর সেই খবর বিশ্লেষণ করি।’
‘ভাল। ভাল। অতি উত্তম। বিবিসি শুনবেনা তো কি শুনবে?’
‘আমাদের রেডিও কি আর শোনার উপায় আছে? এই নাও বাবারা পঁচিশ টাকা।’
দলের প্রধান এমন ভাব করল যে সে খুবই অপমানিত হয়েছে। মুখ বাঁকিয়ে বলল, স্যার বুঝি ভিক্ষা দিচ্ছেন?
‘আরে না, ভিক্ষা কেন দিব।’
‘একটা শর্ট ওয়েভ রেডিওর দাম খুব কম হলেও দু হাজার। শর্ট ওয়েভ রেডিও ছাড়া আমরা বিবিসি শুনব কিভাবে?’
‘তা তো বটেই, যুক্তিসংগত কথা। আচ্ছা দু’হাজারই নাও--আমার দিকে একটু খেয়াল রাখবে।’
তা তো রাখবোই। প্রতীক কি পেয়েছেন খবর দিবেন। আমরা বিবিসি শ্রবণ সমিতি আপনার পেছনে আছি। দলের প্রধান দু’হাজার টাকা হাতে পেয়ে চেঁচিয়ে ওঠল, ‘সিদ্দিকুর রহমান খোন্দকার’। বাকি সবাই এক সঙ্গে চেঁচাল- ‘দূর হবে অন্ধকার’।
এইসব শুনতে ভাল লাগে। খুবই ভাল লাগে। কিন্তু টাকা যে হারে যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে দিন সাথেক পর আর কিছুই ভাল লাগবে না। তার উপর মার্কা হল কুমীর। কোন মানে হয়?
সিদ্দিক সাহেবের পাশে তাঁর নির্বাচনী উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান মুখলেস সাহেব বসে আছেন। অতি বিচক্ষণ ব্যক্তি। সিদ্দিক সাহেবকে ভাজিয়ে ভাজিয়ে ইলেকশনে দাঁড়া করানোর বুদ্ধিও তাঁর। মুখলেস সাহেব স্থানীয় হোমিওপ্যাথ ডাক্তার। তাঁর ডাক্তারখানাই সিদ্দিক সাহেবের নির্বাচনী অফিস। কুমীর প্রতীকের খবর স্থানীয় জনগণকে পৌঁছে দেবার জন্যে মুখলেস সাহেব কিছুক্ষণ আগে একটা রিকশা মিছিল বের করেছেন। পঁচিশটা রিকশা। একটার পেছনে একটা যাচ্ছে। প্রথম রিকশা থেকে একজন চেঁচিয়ে বলছে, খবর আছে?
পেছনে প্রতিটি রিকশায় দু’জন করে কর্মী বসা। তাঁরা চেঁচিয়ে বলছে, আছে।
‘কি খবর?’
‘কুমীর।’
‘কার কুমীর?’
‘সিদ্দিক সাহেবের কুমীর।’
কুমীর প্রতীকের খবর শহরে ছড়িয়ে দেবার দায়িত্ব শেষ করে মুখলেস সাহেব ফার্মেসীতে এসে বসলেন। সিদ্দিকুর রহমান আগে থেকেই সেখানে আছেন। তাঁর মুখের বিরস ভাব তিনগুণ বেড়েছে, কারণ কিছুক্ষণ আগেই ভয়েস অব আমেরিকা শ্রবণ সমিতিও দু’হাজার টাকা নিয়ে গেছে, শ্রবণ সমিতির খবর প্রচার হলে- আরও সব সমিতি তৈরি হবে। ‘আকাশবাণী শ্রবণ সমিতি,’ ‘রেডিও শ্রীলংকা শ্রবণ সমিতি...’
মুখলেস সাহেব চায়ের কাপ হাতে সিদ্দিক সাহেবের পাশে বসতে বসতে বললেন, কুমীর মার্কা পাওয়ায় আমাদের খুবই সুবিধা হয়েছে। যাকে বলে শাপে বড়।
সিদ্দিক সাহেব মরা মরা গলায় বললেন, কেন?
‘নতুন ধরনের ক্যাম্পেইন করব। “ভোট দিবেন কিসে? কুমীর মার্কা বাক্সে” জাতীয় ফাজলামী না। নতুন স্টাইল। আমরা জীবন্ত কুমীর নিয়ে আসব।’
‘জীবন্ত কুমীর?’
‘হ্যাঁ জীবন্ত কুমীর। নির্বাচনী প্রচার হবে জ্যান্ত কুমীর দিয়ে। পাঁচমণি দুই কুমীর থাকবে মিছিলের সামনে। পাবলিক কুমীর দেখে ট্যারা হয়ে যাবে। বাঙ্গালী হচ্ছে হুজুগের জাত। এই হুজুগে সব ভোট চলে যাবে কুমীরের বাক্সে।’
‘কুমীর পাবে কোথায়?’
‘ঢাকার চিড়িয়াখানা থেকে ভাড়া নিয়ে আসব।’
সিদ্দিক সাহেব বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘ওরা কুমীর ভাড়া দেয় না-কি?’
‘জানি না। না দেওয়ার তো কোন কারণ নেই। চেষ্টা করে দেখতে হবে। আমি নিজেই যাব। না পাওয়া গেলে সুন্দরবনের খাল থেকে কুমীর ধরা হবে। টাকা খরচ হবে- উপায় কি?’
‘কত লাগবে?’
‘কুমীর প্রতি পনেরো হাজার ধরুন। দুটায় ত্রিশ প্লাস ক্যারিং কস্ট। ট্রাকে করে তো আর আনা যাবে না- পানির ট্যাংকে করে আনতে হবে। আমাদের ইলেকশনে পাশ-ফেল নির্ভর করছে কুমীরের উপর। জ্যান্ত কুমীর চলে এলে কর্মীদের মধ্যেও উৎসাহের জোয়ার চলে আসবে।’
‘কথাটা ভুল বলনি।’
সিদ্দিক সাহেবের মুখ থেকে মন খারাপের ভাব অনেকখানি দূর হয়ে গেল। মুখলেস সাহেব পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা নিয়ে ভোরের ট্রেনে ঢাকা চলে গেলেন। পৌঁছেই আর্জেন্ট টেল্রিগ্রাম করলেন- “Send more money.”
টাকা পাঠিয়ে দেয়া হল। দ্বিতীয় টেলিগ্রাম (আর্জেন্ট) চলে এল, “Artist coming. Crocodiles follow”. এই টেলিগ্রামের অর্থ সিদ্দিক সাহেব কিছুই বুঝলেন না। Artist coming মানে কি? হওয়া উচিত Crocodile coming. স্থানীয় কলেজের ইংরেজীর অধ্যাপককে অর্থ উদ্ধারের জন্য দেয়া হল। তিনিও কিছুই বুঝলেন না তবু হাসতে হাসতে বললেন, সামান্য জিনিস বুঝতে পারছেন না? কুমীর আসবে খুব আর্টিস্টিক ভঙ্গিতে। মানে কায়দা-কানুন করে আনা হচ্ছে আর কি। হা-হা-হা। সামান্য ইংরেজী লোকজন বুঝতে পারে না--So sad. বড়ই দুঃখজনক।
টেলিগ্রামের অর্থ পরিষ্কার হওয়ামাত্র সিদ্দিক সাহেবের বাসার সামনের মাঠ খুঁড়ে পুকুরের মত করা হল। সাইনবোর্ডে লেখা হল-
সাবধান! সাবধান! সাবধান!
জলে কুমীর আছে।
গোসল, কাপড় কাঁচা নিষিদ্ধ।
কুমীর এল না, তবে মুখলেস সাহেবের চিঠি নিয়ে জীনসের প্যান্ট এবং আউলা-ঝাউলা চুল নিয়ে এক লোক উপস্থিত। চিঠিতে লেখা-
“টেলিগ্রামে পাঠানো বার্তা অনুযায়ী আর্টিস্ট পাঠালাম। সে কুমীরের ছবি এঁকে চারদিকে ছয়লাপ করে দেবে। তাকে যত্নে রাখবেন। এ দিকে কুমীরের খবর হল, ঢাকা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ কুমীর ভাড়া দিতে রাজী নন। আমি অদ্য ভোরে খুলনা রওনা হচ্ছি। সরাসরি কুমীর ধরা ছাড়া অন্য পথ দেখছি না। ঠিক করেছি, সরাসরি যখন ধরতেই হচ্ছে--দু’টা না ধরে গোটা দশেক ধরে নিয়ে আসব। কুমীর ধরার কাজে সহায়তা করার জন্যে প্রাণীবিদ্যায় M.Sc (দ্বিতীয় শ্রেণী, সপ্তম স্থান) একজন ছাত্রকে নিযুক্ত করেছি। তার নাম আবুল কালাম। বেতন মাসিক চার হাজার। এই সঙ্গে ‘বিপদ ভাতা’ দু’হাজার।
আপনি পত্র পাওয়ামাত্র নিচের ঠিকানায় আরও কুড়ি হাজার পাঠিয়ে দেবেন। মনে সাহস রাখবেন। আমাদের বিজয় নিশ্চিত। জয় কুমীর।”
আর্টিস্ট পঞ্চাশ টাকার গাঁজা এবং তিন প্যাকেট স্টার সিগারেট খেয়ে বিশাল এক কুমীর এঁকে ফেলল। সিদ্দিক সাহেব হতভম্ব হয়ে বললেন, লাল রঙের কুমীর? কুমীর কি লাল হয়?
আর্টিস্ট বিরক্ত মুখে বললেন, লাল না- এটা মেজেন্টা কালার।
‘কুমীর কি মেজেন্টা কালারের হয়?’
‘হয় না- ইচ্ছা করেই মেজেন্টা করে দিলাম। দূর থেকে চোখে পড়বে রাগী কুমীর।’
‘রাগী কুমীর মানে--আমি কি রাগী?’
আর্টিস্ট থমথমে গলায় বললেন, কি যন্ত্রণা! আপনি কি কুমীর না-কি? আপনার মার্কা কুমীর। আপনার মনের মিল রেখে কুমীর আঁকতে হলে তো কুচকুচে কালো রঙের কুমীর আঁকতে হয়।
সিদ্দিক সাহেব অনেক কষ্টে রাগ সামলে বললেন, কুমীরের লেজ থাকে বলে জানতাম। এটার লেজ কোথায়?
‘লেজ আছে। লেজটা বেঁকিয়ে শরীরের পেছনে রেখেছে বলে আপনি দেখতে পাচ্ছেন না।’
‘লেজটা বেঁকিয়ে শরীরের পেছনে কেন রাখল জানতে পারি?’
‘অবশ্যই জানতে পারেন। কাগজ কম পড়ে গেল। পোস্টার বোর্ড আরও বড় হলে চমৎকার লেজ দিয়ে দিতাম।’
কুমীরের বিশাল ছবি সিদ্দিক সাহেবের নির্বাচনী অফিসের সামনে টানিয়ে দেয়া হল। সিদ্দিক সাহেব তৎক্ষণাৎ আর্টিস্টকে ডেকে পাঠালেন। রাগী গলায় বললেন, ‘লোকে বলছে কুমীরটা দেখতে টিকটিকির মত হয়েছে।’
আর্টিস্ট হাসিমুখে বললেন--ঠিকই বলছে।
‘ঠিকই বলছে মানে?’
মন দিয়ে শুনুন- ছবি কি ভাবে আঁকতে হয় আপনাকে বুঝিয়ে বলছি। একটা মডেল সামনে রাখতে হয়। সেই মডেল দেখে দেখে আঁকতে হয়। আমার সামনে কোন মডেল ছিল না- টিকটিকি দেখে এঁকেছি। এখন বুঝলেন? আসল কুমীর দেখে যখন ছবি আঁকব তখন বুঝবেন কুমীর কাকে বলে। স্যার, গাঁজার পরিমাণ বাড়াতে হবে। পঞ্চাশ টাকার গাঁজায় কিছুই হয় না।
সিদ্দিক সাহেব বললেন, দয়া করে আর ছবি আঁকবেন না। কুমীর আসুক। কুমীর দেখে যা আঁকার আঁকবেন।
‘নো প্রবলেম।’
নির্বাচনী প্রচারেও ভাটা পড়ে গেল। কুমীর এলে জোরে সোরে শুরু হবে এই অবস্থা। মুখলেস সাহেব বাগেরহাট থেকে টেলিগ্রাম পাঠালেন-
“Good News. Coming with fifty crocodiles.”
চারদিকে হৈ হৈ শুরু হয়ে গেল। সন্ধ্যাবেলা সিদ্দিক সাহেবের বাসায় থানার ওসি এসে উপস্থিত।
‘সিদ্দিক সাহেব, এসব কি শুনছি?’
‘কি শুনছেন?’
‘পঞ্চাশটা কুমীর না-কি আনছেন?’
‘ঠিকই শুনেছেন। নির্বাচনী কাজে আনা হচ্ছে। কাজ হলে সুন্দরবনে ছেড়ে দিয়ে আসা হবে।’
‘নির্বাচনী নীতিমালা লংঘন করছেন। কুমীর আপনি আনতে পারেন না।’
‘অবশ্যই পারি। কোন আইনে আছে যে নির্বাচলে কুমীর ব্যবহার করা যাবে না?’
ওসি সাহেব অনেক ঘাঁটাঘাটি করেও নির্বাচনী নীতিমালায় এমন কোন আইন খুঁজে পেলেন না। তবে শহরে ঘোষণা দিয়ে দিলেন- কুমীরের কাছ থেকে সবাই যেন দূরে থাকেন। তিনি জেলা শহরে কুমীর বাহিনী শান্তি রক্ষার জন্যে বাড়তি পুলিশ চেয়ে পাঠালেন। সারা শহরে হৈ চৈ পড়ে গেল।
পুরো ব্যাপারটায় উৎসাহী হয়ে সিদ্দিক সাহেব মুখলেসকে জরুরী টেলিগ্রাম পাঠিয়ে লিখলেন- “সম্ভব হলে একশ কুমীর নিয়ে এসো। আরও কুড়ি হাজার টাকা পাঠালাম। জয় কুমীর।”
আমার ধারণা, উন্মাদের পাঠক-পাঠিকারা আমার এই রচনা পড়ে আমার উপর যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষিপ্ত হয়েছেন। তাঁদের কাছে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে নিবেদন করছি ঘটনা সবই সত্য। কুমীর প্রতীকে নির্বাচন করেছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। আমার উপর দায়িত্ব ছিল ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে কুমীর নিয়ে যাওয়ার। আমি যথাসময়ে কয়েকটা মাটির কুমীর নিয়ে উপস্থিত হয়। কবি গুণের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। তাঁর ধারণা, এই ভরাডুবি হয় আমার কারণে। আমি যথাসময়ে কুমীর নিয়ে এলে এই কাণ্ড হত না।
এর পরেও যারা আমার কথা বিশ্বাস করছেন না। তাঁদের কবি গুণের বাসভূমি বারহাট্টায় যেতে বলছি। কবির পৈতৃক বাড়ির পেছনে পুকুরের কাছে এখনো সাইনবোর্ড ঝুলছে--
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন