অনেক অনেক অনেক অনেক বছর আগের কথা। এক দেশে এক রাজধানী ছিল। আর রাজধানীর মধ্যভাগে ছিল সংসদ ভবন। আর সেই সংসদ ভবনের সামনে আজ জটলা। জটলার কারণ ব্যাঙ। অবশ্য ভুল বলা হলো, এ জনপদে ব্যাঙ কোনো দিন কোনো জটলার কারণ হতে পারে নি। আসল কারণ ব্যাঙ ধরে থাকা পেলব জাতের রাজকুমারীটি। কী তার রূপ! এমন রূপ দেখে এই জনপদের এক লেখক এক সময় বলবেন, বড়ই সৌন্দর্য!
কিন্তু এত সুন্দর হয়ে লাভই বা কী হলো এই রাজকুমারীর! বর পাইছে দেখ একটা ব্যাঙ! এর মধ্যেই জটলার কেউ কেউ অবশ্য ব্যাঙকে ভাই ডাকা শুরু করেছে। আর ভাবি ভাবি বলে রাজকুমারীর কাঁধে গলায় কল্পনার জিভ রাখতে শুরু করেছে।
রাজকুমারীর অবশ্য এদিকে খেয়াল নেই। তাকে তার ব্যাঙবরটাকে এক্ষুণি একটা চুমু খেতে হবে। চুমু খেলেই ব্যাঙটা রাজকুমারে পরিণত হবে। সময় বেশি নেই, মিরপুরের বাস চলে যাচ্ছে। এই বাস মিস করলে মিরপুর পেরিয়ে আজ আর কোনোভাবে প্রাসাদে যাওয়া হবে না। রাজকুমারি বলল, শোনেন, আপনারা এভাবে গা ঘেঁষে দাঁড়াবেন না প্লিজ!
: কী বলেন একটা সেলফি তুলতাম না! দেখি আপা, এদিকে তাকায়ে হাসেন তো!
: আরে আপনি আমার গাউন টানাটান করছেন কেন? এটা কী ধরনের অভদ্রতা?
: কাপুড়টা দেখতেছিলাম! হ্যাহ! এমুন কাপুড় পাশের বাড়ির জড়িনারে পরাইলে তারেও সুন্দর দেখাবে!
: সরেন আপনারা সরেন এখান থেকে! আমাকে আমার স্বামীকে চুপু খেতে দেন!
তখনই ভুলোকে
ভীষণ আলোকে
দুলিল সবার মাথা
কহে কী কুমারী
চুমু ও চুমারি
খাইবে এহানে ছাতা!
আমগাছের গোড়ায় হুনুনুলুর ম্যাপ বানিয়ে ঢলঢল করতে করতে ফেরা চাচা ৪২০ বললেন, শোনো গো মা, এইসব চুমাচুমি গোফন জিনিস! তুমার চাচিরে একবার খাইছিলাম! সেই ১৯৫২ সালে! এইগুলা এইখানে না!
আরেকজন ফেসবুকে এর প্রতিকার চেয়ে বলল, এইসব পাশ্চাত্যের বিষয়! এইগুলা নিয়া মাতামাতি মানে আমাদের সংস্কৃতি লোপ! বলেই লোকটা ফ্যাচ করে নাক ঝেড়ে শার্টের হাতায় মুছে নিলো।
এর মধ্যেই চারিদিকে হইচই পড়ে গেল। এ দল বলল এটা ন্যাক্কারজনক। বি দল বলল এটা ষড়যন্ত্র। সি দল বলল চুমু খেলে হুমুকে খাও, ব্যাঙকে কেন?
এই মহা হট্টগোলের মধ্যে রাজকুমারী টুক করে ব্যাঙটাকে চুমু খেয়ে নিলো। সাথে সাথে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নেমে এল। ব্যাঙ বদলে হলো রাজকুমার। সবাই এদিক ওদিক ছুটে পালাল।
রাজকুমার আর রাজকুমারী আবারও চুমু খেতে থাকল, আবারও চুমু খেতে থাকল, আবারও!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন