এয়ারটেল নেটওয়ার্ক আর কবুতরের মধ্যে কোনটা ফাস্ট তা নিয়ে বাজি ধরে দুই বন্ধু যা বুঝলো

২১০২ পঠিত ... ২০:০৯, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৭

রিফাত মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আছে। সে তার বসকে একটা মেইল পাঠিয়েছে। যদিও তার এয়ারটেলের নেটওয়ার্কের ওপর ভরসা নেই, তবে তাও সে ভেবেছিলো দুই ঘন্টা যেহেতু সময় আছে, মেইলটা পাঠিয়ে দেয়াই যায়। কিন্তু এখন তার ভয় লাগতে শুরু করেছে। সময় মতো মেইল না গেলে চাকরিটাই ঝুঁকিতে পরে যাবে।

রিফাত প্রতি দুই মিনিট পর পর ব্রাউজার রিফ্রেশ করছে আর পাঁচ মিনিট পর পর মোবাইল ডাটা অন অফ করছে। এই 'বাংলা' চিকিৎসায় লাভ হচ্ছেই না এমন না, প্রতিবারই দুই তিন কিলোবাইট ডাটা আপলোড হচ্ছেই। সে ভাবতে থাকলো, এয়ারটেল নেটওয়ার্কই সম্ভবত এই জমানার ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার। কেউ ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্যবহার করে না দেখে তারা এয়ারটেলের মোড়কে আবার সবার কাছে ফিরে এসেছে। এসব ভাবতে ভাবতে নব্বইবার রিফ্রেশ আর ছত্রিশ বার ডাটা কানেকশন অন অফ করার পর রিফাতের ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেল। তার মনে হলো এরচেয়ে আদিম যোগাযোগের মাধ্যম কবুতর দিয়ে চিঠি পাঠালে তাড়াতাড়ি পাঠানো সম্ভব হত।

রিফাতের পাশের ডেস্কেই বসে তার কলিগ, বন্ধু এবং অন্য মোবাইল অপারেটর ইউজার সিফাত। সিফাতকে এই কথা বলতেই সে খেঁকিয়ে উঠলো! 'আরে ধুর, কবুতর মোবাইল নেটওয়ার্কের আগে যায় নাকি কখনো! ঠিক আছে, একটা নেটওয়ার্ক স্লো, তাই বলে এত বাড়িয়েও বলিস না!'

রিফাতের মেজাজ এমনিতেই ভালো না। চটে গিয়ে সে সিফাতের সঙ্গে বাজি ধরে ফেললো, কবুতর পাঠিয়ে সে পরীক্ষা করে প্রমাণ করে দেবেই, ৫০০ টাকা বাজি! সিফাতও রাজি হয়ে গেলো, মাগনা ৫০০ টাকা পাওয়া যাচ্ছে, খারাপ কী!

রিফাত চলে গেল বাসার পাশের এক পাখির দোকানে। সেখান থেকে একটা চিঠি পাঠানোর ট্রেনিংপ্রাপ্ত পায়রা নিয়ে তার পায়ে ডকুমেন্ট বেঁধে ছেড়ে দিল তার বসের বাসার উদ্দেশ্যে। মোবাইলে দেখলো মেইল এখনো দুই পার্সেন্টও যায় নি।

সিফাত আর রিফাত অপেক্ষা করছে। এক ঘন্টা যায়, দুই ঘন্টা যায়, না আপলোড স্পিড বাড়ে, না কবুতরের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়। ঘন্টাখানেক পর আসলো বসের ফোন। রিফাত ধরেই নিয়েছে, তার চাকরি গেছে, বস ডকুমেন্ট এখনও না পেয়ে চেচামেচি করবেন। সিফাত ধরেই নিয়েছে, ৫০০ টাকা পকেটে তাহলে চলেই এলো!

ভয়ে ভয়ে ফোন ধরলো রিফাত। ফোন ধরতেই তার বস বললো, 'ফাইলটা তোমার আর পাঠাতে হবে না। আমি ফাইলটা অন্যভাবে পেয়েছি... বড় অদ্ভুত ব্যাপার... কে যেন...'

রিফাত বোকার মতো আমতা আমতা করে উত্তর দিল, 'ইয়ে, স্যার, মানে এয়ারটেলে নেট ব্যবহার করে মেইল পাঠানোর চেয়ে কবুতরের পায়ে বেঁধে পাঠালেই দ্রুত মেইল যায় তাই এভাবে পাঠালাম।' অপাশ থেকে বস কিছু শুনছেন না অবশ্য, হ্যালো হ্যালো করছেন... এয়ারটেলের নেটওয়ার্ক খারাপ থাকায় হ্যালো হ্যালো করতে করতে লাইনটাই কেটে গেলো...

সিফাত বুথ থেকে ৫০০ টাকা তুলতে যাচ্ছে। রিফাতের মোবাইলে ফাইল আপলোড হওয়া অবশ্য ততক্ষণে অনেকদূর এগিয়েছে, মাত্র চার পার্সেন্ট...'

ডিজাইন: মুবতাসিম আলভী

২১০২ পঠিত ... ২০:০৯, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৭

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top